# ২৭৫ কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারি
# প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকা ও আ.লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী
# ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রায় ১৭ হাজার
# ভোটার ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জননিজস্ব প্রতিবেদক
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ-প্রচার শেষে এবার ব্যালটের পালা। ইতিমধ্যে যশোরের ৬টি আসনের কেন্দ্রগুলোতে ভোটের সরঞ্জাম পৌঁছে গেছে। আর আজ রোববার ভোরে উপজেলা থেকে ব্যালট পেপার কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানোর কথা রয়েছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। আর বিরতি ছাড়াই ভোট নেওয়া চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৭৫টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এসব কেন্দ্র পুলিশ-প্রশাসনের বিশেষ নজরদারি রয়েছে। যশোরে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠে ১৬ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। আর ভোট কর্মকর্তা রয়েছেন প্রায় ১৭ হাজার।
গত ১৮ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল প্রচার ও জনসংযোগ। ১৮ দিনের প্রচার ও গণসংযোগে যশোরের কিছু এলাকায় প্রতিপক্ষের সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেও বেশির ভাগ এলাকায় মিছিল, গণসংযোগ ও প্রচার ছিল শান্তিপূর্ণ। সারা দেশের মতো যশোরেও সবার মনোযোগ এখন ভোটকেন্দ্রের দিকে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে ৩২জন প্রার্থী লড়ছেন। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৮ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। ভোটে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে মূল লড়াইয়ের আভাস মিলছে। জেলায় ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৫ হাজার ২১৭টি ভোট কক্ষে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার হলেন ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন নারী ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হলেন ১৫ জন।
২৭৫ কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারি
যশোরে ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে নৌকার বিপক্ষে হেভিওয়েট আওয়ামী লীগের নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব আসনে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিভিন্নভাবে শাসানো, হুমকি-ধমকি দেওয়া, এমনকি প্রাণনাশের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের পরিবেশে উত্তাপ ছড়িয়েছে যশোরের পাঁচটি আসনেই। ফলে জেলার ছয়টি আসনের ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৭৫টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। যা মোট কেন্দ্রের প্রায় ৩৫ শতাংশ। এসব কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নজরদারিতে রাখছে পুলিশ-প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা। সাধারণ ভোটকেন্দ্রের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হলেও আমরা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি না। নির্বাচনে নিরাপত্তা দিতে ২৫০০ পুলিশ সদস্য, ১০ হাজার আনসার সদস্য, ৪৫০ বিজিবি সদস্য, সেনা সদস্য, ম্যাজিস্ট্রেটসহ গোয়েন্দা বাহিনীর ১৬ হাজার সদস্য নিয়োজিত থাকবে । এছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দাবাহিনী কাজ করবে। নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো থাকবে যশোরের সকল কেন্দ্র।
যশোরের পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্র দখল, ভোটকক্ষ দখল, ভোট কাটা, ভোটের পরিবেশ নষ্ট করা এ ধরণের চিন্তা যদি কেউ করেন, তাদের কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যদি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ছক করেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নিবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জেলা পুলিশের সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হবে। নির্বাচনের পরিবেশ ভালো আছে। পরিবেশ ভালো রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সূত্র আরও জানায়, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নির্বাচনী এলাকা টহল দেবে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা।
প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকা ও আ.লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী
যশোর- ১ (শার্শা) নৌকার প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিনের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ট্রাক প্রতীকের জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম লিটনের। যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনিত নৌকার প্রার্থী হচ্ছেন ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন। তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দলের সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ট্রাক প্রতীক। যশোর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের কাজী নাবিল আহমেদের সঙ্গে ভোটের মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। তিনি পেয়েছেন ঈগল প্রতীক। নাবিলের প্রধান প্রতিন্দ্বন্দ্বী হিসাবে ভোটারা দেখছেন নিজ দলের মোহিত কুমার নাথকে।
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে নির্ভার আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী এনামুল হক বাবুল। তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী নেই। আদালতে হেরে গিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এ আসনের সংসদ সদস্য রনজিৎ কুমার রায়। তবে জাতীয় পার্টির জহুরুল লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচনের মাঠে রয়েছেন। যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত স্বপন ভট্টাচার্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা কৃষকলীগের সহসভাপতি ইয়াকুব আলী। তিনি পেয়েছেন ঈগল প্রতীক। এই আসনে নৌকার স্বপন ভট্টচার্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলীর লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের শাহীন চাকলাদারের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচএম আমির হোসেন। তিনি পেয়েছেন কাঁচি প্রতীক। এখানে নৌকার বিপক্ষে এইচএম আমির হোসেন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা। তবে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আজিজুর রহমানও ঈগল প্রতীকে ভোটের মাঠে রয়েছেন।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা প্রায় ১৭ হাজার
যশোর জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে ভোটারের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন। পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন, নারী ভোটারের সংখ্যা ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৫৩ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১৫ জন। জেলায় ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৮২৫টি ও ভোটকক্ষের সংখ্যা ৫২১৭টি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ৩২ জন।
৮২৫টি কেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ১৬ হাজার ৪৮০। এর মধ্যে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে ৮২৫ জন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে ৫ হাজার ২২১ জন এবং পোলিং অফিসার হিসেবে ১০ হাজার ৪৩৪।
ভোটার ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে ৩২জন প্রার্থী লড়ছেন। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র ৮ প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। ভোটে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে মূল লড়াইয়ের আভাস মিলছে। জেলায় ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৫ হাজার ২১৭টি ভোট কক্ষে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার হলেন ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন, নারী ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হলেন ১৫ জন।
এরমধ্যে যশোর-১ (শার্শা) আসনে মোট ভোটার দুই লাখ ৯৪ হাজার ৬৯৭। এরমধ্যে পুরুষ এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৮, নারী এক লাখ ৭৭ হাজার ১১৭ ও হিজড়া ভোটার রয়েছেন দুইজন। ১০২ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলবে। যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৫৬ হাজার ৭০৮। এরমধ্যে পুরুষ দুই লাখ ২৯ হাজার ৪৩১। নারী দুই লাখ ২৭ হাজার ২৭৭। ১৭৬ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলবে। যশোর-৩ (সদর) আসনে মোট ভোটার পাঁচ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৫। এরমধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৯২ হাজার ৯৪০, নারী দুই লাখ ৮৬ হাজার ৯৮৯ ও হিজড়া ভোটার রয়েছেন ছয়জন। ১৮৯ কেন্দ্রে এ ভোটগ্রহণ চলবে। যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৩৩ হাজার ৮৪০। এরমধ্যে পুরুষ দুই লাখ ১৬ হাজার ৮০০, নারী দুই লাখ ১৭ হাজার ০৩৬ ও হিজড়া ভোটার রয়েছেন চারজন। ১৪৯ কেন্দ্রে এ ভোটগ্রহণ চলবে। যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৫৫ হাজার ৯৭৯। এরমধ্যে পুরুষ এক লাখ ৭৯ হাজার ৪৩১, নারী এক লাখ ৭৬ হাজার ৫৪৬ ও হিজড়া ভোটার রয়েছেন দুইজন। ১২৮ কেন্দ্রে এ ভোটগ্রহণ চলবে। এবং যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে মোট ভোটার দুই লাখ ১৭ হাজার ৯২৪। এরমধ্যে পুরুষ এক লাখ ০৯ হাজার ৯১৩, নারী এক লাখ ০৮ হাজার ০১০ ও হিজড়া ভোটার রয়েছেন একজন। ৮১ কেন্দ্রে এ ভোটগ্রহণ চলবে।
সর্বশেষ
- তৃতীয়বারের মতো ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত হলেন জয়া আহসান
- সালমানের নিরাপত্তা বাড়াতে বিগ বস ১৯-এর শুটিংয়ে নতুন পদক্ষেপ
- গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭২ ফিলিস্তিনি নিহত
- জনদুর্ভোগ ঘটিয়ে উল্টো ৬০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চায় মাহাবুব ব্রাদার্স
- মণিরামপুরে শিয়ালের কামড়ে কিশোরের মৃত্যু
- শরতকালে গ্রীষ্মকালের মতো গরম লোডশেডিংয়ে জনজীবনে দুর্ভোগ
- ঘর ভাড়া না দেয়ায় জনির নামে আইনজীবী সমিতিতে অভিযোগ
- যশোর-২ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ডা. ফরিদের মতবিনিময়