শাহারুল ইসলাম ফারদিন
মধ্যরাতে শেষ হয়েছে যশোর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। নিয়মানুযায়ী ৩৬ ঘণ্টা আগে অর্থাৎ গতকাল রাত ১২টায় প্রচারণা শেষ হয়েছে। এবার ভোটের প্রতীক্ষা। আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর অর্থাৎ আগামীকাল বুধবার সকাল ৮টায় শুরু হবে ভোট গ্রহণ। বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন)।
নির্বাচন অফিস সূত্র মতে, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৬ প্রার্থী প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৮, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৩ জন।
সদর উপজেলা নির্বাচনে এবার মোট ২১৯টি ভোট কেন্দ্রে ১ হাজার ৭৫৬ কক্ষে ভোটগ্রহণ হবে। এতে দায়িত্ব পালন করবেন ২১৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১ হাজার ৭৫৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও ৩ হাজার ৫১২ জন পোলিং অফিসার। ইতিমধ্যে ভোটের আনুষ্ঠানিক সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ। তিনি জানান, সদরের ১টি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়নের ২১৯টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। মোট ভোটার ৬ লাখ ৭ হাজার ৭৪২ ভোটার। এরমধ্যে পুরুষ ৩ লাখ ৪ হাজার ৭৩০, মহিলা ৩ লাখ ৩ হাজার ৫২ ও হিজড়া ভোটার ৭ জন।
১৬ প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী ৮ জন। চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী আনারস, তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু মোটরসাইকেল, ফাতেমা আনোয়ার ঘোড়া, আনোয়ার হোসেন বিপুল দোয়াত কলম, মোহিত কুমার নাথ শালিক, শাহারুল ইসলাম জোড়া ফুল, শফিকুল ইসলাম জুয়েল কাপ পিরিচ ও আরিফুল ইসলাম হীরা হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে, ভাইস চেয়ারম্যান পদে সুলতান মাহমুদ বিপুল (টিউবওয়েল), শেখ জাহিদুর রহমান লাবু (বৈদ্যুতিক বাল্ব), শাহাজান কবির শিপলু (চশমা), কামাল খান পর্বত (তালা) ও মনিরুজ্জামান (উড়োজাহাজ) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। সেই সাথে ছুটছেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোৎস্না আরা মিলি (কলস), বাশিনূর নাহার ঝুমুর (ফুটবল) এবং শিল্পী খাতুন হাঁস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে সব প্রার্থীকে মাঠে সেভাবে দেখা যায়নি। এরমধ্যে এক-দুইজন চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন। আছেন পুরুষ ও সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীও। ভোটারদের অনেকের মন্তব্য, তারা নাম ফোটাতে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তাদের জামানত রক্ষা হবে না।
অন্যদিকে, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে পুলিশ সদস্য, আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাব, পুলিশ, ডিবি পুলিশ, আনসারসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এদিকে, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণের আয়োজন করতে প্রশাসন নানামুখী তৎপর হলেও শংকা রয়েছে ভোটারদের মধ্যে। কারণ প্রার্থীরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের। তাই সবাই ক্ষমতার প্রভাব দেখানোর চেষ্টা করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিএনপির ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে কেউ আনতে চাইবে; আবার কেউ ভোট দিতে যেতে নিষেধ করলে সংঘাত-রক্তপাত হতে পারে।
স্থানীয় ভোটাররা বলছেন, ভোটের পরিবেশ যদি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ থাকে তাহলে সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারবেন তারা। যশোরের অতিরিক্ত নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুর রশীদ জানান, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলার ৭টি উপজেলায় সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও ত্রুটিমুক্ত পরিবেশের সম্পূর্ণ করা হয়েছে। আশা করছি আগামী ৫ জুন এ উপজেলা নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পূর্ণ করে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আগামীকাল নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করছি কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন হবে।