কল্যাণ ডেস্ক: এই সপ্তাহ থেকে দেশে ভোজ্যতেল আমদানির ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক তথা ভ্যাট) প্রত্যাহারের ঘোষণা হতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট বিভাগ ভোজ্যতেল আমদানির ভ্যাট প্রত্যাহার করতে কাজ করছে। বাজারে ইতিমধ্যে সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে এবং পবিত্র রমজান মাস আসছে—এমন প্রেক্ষাপটে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হতে পারে। ভ্যাট প্রত্যাহারের সুপারিশ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এনবিআরকে চিঠি দিয়েছে।
এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ বিশ্লেষণ করছে। বর্তমানে আমদানি ও উৎপাদন বা ব্যবসায়িক দুই পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ রয়েছে। দুই পর্যায়েই ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সে জন্য আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট কমানো হতে পারে বলে এনবিআরের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
জানতে চাইলে ভ্যাট বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাবটি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে। তা অনুমোদন হলে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে এক লিটার ১৬৮ টাকা, দুই লিটার ২৩৫-৩৪৫ টাকা ও পাঁচ লিটার সাড়ে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ভোজ্যতেলের বেশ সংকটও আছে। এ নিয়ে গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই আলোচনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অবশ্য ব্যবসায়ীদের দেওয়া ভোজ্যতেলের দাম আরও বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে।
সয়াবিন তেলের দাম স্থিতিশীল রাখার উপায় উদ্ভাবনের বিষয়ে আলোচনা করতে গত সোমবার আমদানিকারক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) নেতারা। বৈঠকে আগামী তিন মাসের জন্য ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক-কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
চিনি আমদানিতে ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ ছিল। গত বছরের অক্টোবর মাসে তা কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। এই শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এদিকে রমজান মাস উপলক্ষে চিনির দাম স্থিতিশীল রাখতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কে ছাড় অব্যাহত রাখা হয়েছে। চিনি আমদানিতে ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ ছিল। গত বছরের অক্টোবর মাসে তা কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়। এই শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে এনবিআর নতুন আদেশে চিনি আমদানির ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্কে দেওয়া ছাড়ের মেয়াদ বাড়িয়েছে। অর্থাৎ আরও আড়াই মাসের জন্য চিনি আমদানিতে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ২০ শতাংশ অব্যাহত রেখেছে এনবিআর।