সাজেদ রহমান: ‘লম্বা গাছের মগ ডালেতে/পৌঁছূতে চাই ত্বরা, যোদ্ধা হয়েও কঠিন যে আজ/ আবেগকে জয় করা/ আজকে প্রথম দেখবো আমি/ দু’চোখ ভরে তাঁকে, চাষা থেকে যোদ্ধা হলাম একরাতে/, যাঁর ডাকে/ মগ ডালেতে পৌঁছে তাকাই/ এয়ারপোর্টের দিকে/ লক্ষ লোকের ভিড়ের মাঝে/ চিনবো তো সেই শেখকে…স্বাধীন দেশে ফিরলে তুমি/ হাজার স্বপ্ন নিয়ে/ আমার স্বপ্ন সত্যি হলো/ তোমার দেখা পেয়ে।
কবিতাটি লিখেছে যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী প্রিয়তি পারমিতা ভদ্র। কবিতাটি স্থান পেয়েছে ‘খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থে। এটি প্রকাশ করেছে যশোরের জেলা প্রশাসন। মূলত মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে শিশুদের লেখা ও আঁকার সংকলন এটি।
যেসব শিশুর লেখা এখানে ছাপা হয়েছে, তাদের অনেকের হাতের লেখাগুলো স্ক্যান করেই দেয়া হয়েছে। যশোরের শিশুদের এত সুন্দর হস্তাক্ষর, যিনি এই গ্রন্থটি দেখেননি তিনি বুঝতে পারবেন না তারা কত দরদ দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখেছে। এই শিশুরা একদিন বড় হবে। শতবর্ষ পর এই গ্রন্থ ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবে। ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবেন যাঁর পরিকল্পনায় এটি সম্ভব হয়েছে, সেই যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানসহ যাঁরা এটি সম্পাদনা করেছেন।
গভীর দেশপ্রেম, সীমাহীন আত্মত্যাগ ও অতুলনীয় নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা। তার বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্বে একটি দেশ স্বাধীন হয়েছে। বাংলার শোষিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে নেতৃত্বের জন্য তিনি বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হন। বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর সীমাহীন ত্যাগ-তিতীক্ষা, জেল-জুলুম, নির্যাতনের কারণে তাঁকে জাতির পিতার অভিধায় অভিষিক্তও করা হয়েছে। যশোরের শিশুরা এই কয়েক বছরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নিশ্চয় অনেক পড়াশোনা করেছে। না হলে এত সুন্দর করে তাঁকে নিয়ে কবিতা কিংবা প্রবন্ধ লেখা সম্ভব নয়। আর সেটি গ্রন্থণা আকারে প্রকাশ করে জেলা প্রশাসন তাদেরকে আরও উৎসাহিত করেছেন। নিশ্চয় কাজটি মহৎ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি অনন্য নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাঙালি জাতির পিতা। তাঁর দূরদর্শী ও সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তিনি তাঁর নেতৃত্ব ও ভালোবাসার কারণেই বাঙালি জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাইতো গৌরী প্রসন্ন মজুমদার লিখেছেন-
‘শোনো, একটি মুজিবরের থেকে/লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি
আকাশে বাতাসে ওঠে রণি/বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ।’