নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে পুরোদমে চলছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি। দুর্গা দেবীর আগমনকে কেন্দ্র করে জেলার প্রতিটি মন্দির ও মণ্ডপে প্রতিমা নির্মাণ ও সাজসজ্জার কাজ চলছে । খড় ও কাদামাটির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন চলছে রঙের কাজ ও সাজসজ্জা। প্রতিমা কারিগরদের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে।
এ বছর যশোর জেলায় মোট ৭০৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ১৬৫টি, অভয়নগরে ১২৭টি, কেশবপুরে ৯৮টি, মণিরামপুরে ৯৬টি, বাঘারপাড়ায় ৯১টি, ঝিকরগাছায় ৫৪টি, চৌগাছায় ৪৮টি ও শার্শায় ২৯টি মণ্ডপে পূজা উদযাপন হবে।
বেজপাড়া পূজা মণ্ডপের প্রতিমা শিল্পী জয়দেব পাল জানান, এ বছর তিনি ৩৮টি প্রতিমার অর্ডার পেয়েছেন। চার মাস আগে কাজ শুরু করলেও এখন কাজের গতি বেড়েছে। প্রতিমার গায়ে রঙ তুলির আঁচড় চলছে। এরপর শুরু হবে সাজসজ্জার কাজ।
যশোরের বকচর মন্দিরের শিল্পী গোপাল পাল জানান, এ বছর কাজের চাপ বেশি। যশোরসহ আশপাশের চার জেলার জন্যেও প্রতিমা তৈরি করছেন তিনি। টানা বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও এখন দিন-রাত কাজ করছেন।
আরেক শিল্পী পলাশ পাল বলেন, পূজার আর মাত্র দশ দিন বাকি। আগামী ৬-৭ দিনের মধ্যে প্রতিমা হস্তান্তর করতে হবে। এখন চলছে রঙের কাজ। এরপর সাজসজ্জা। তবে উপকরণের দাম বাড়ায় লাভ খুব একটা হচ্ছে না।
পূজার শান্তিপূর্ণ আয়োজন নিশ্চিতে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রতিটি মন্দিরভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে যেখানে হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে কাজ করছেন। আয়োজন করা হয়েছে সম্প্রীতি শোভাযাত্রারও।
যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন জানান, জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। সবাই সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম জানান, পূজা উপলক্ষে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। মাঠে থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীও। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবেন। প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে শুরু হবে দুর্গা উৎসব ও ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। প্রশাসন ও আয়োজকরা আশাবাদী, উৎসব হবে শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: জীবিকা সংগ্রামে রাস্তায় লেবু বিক্রি করা সেই শিক্ষকের পাশে এক্স গ্রামীণ ফোন যশোর টিম