নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি বিশ্বের কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়া এমপক্স বা মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে আক্রান্তরা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য পদক্ষেপ নিয়ে প্রশাসন। যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের অন্যতম বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি যশোর বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ সন্দেহভাজনদের নজরদারিতে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান। রোববার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক উন্নয়ন কমিটির সভায় এ কথা জানান তিনি।
সিভিল সার্জন বলেন, ইতিমধ্যে বেনাপোল স্থলবন্দর ও বিমানবন্দরে আগত যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, মাঙ্কিপক্স ভাইরাস ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ যেমন, যৌন সম্পর্ক, গায়ে গা লাগা ও অন্য জনের খুব কাছে গিয়ে কথা বলা বা নিঃশ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে ছড়াতে পারে। কোন ব্যক্তি মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক যে লক্ষণগুলো দেখা দিবে তারমধ্যে অন্যতম জ্বর, মাথাব্যথা, পিঠে এবং পেশিতে ব্যাথা।
মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারের সভাপতিত্বে জেলার সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম ও সমসাময়িক সমস্যার কথা তুলে ধরেন বিভিন্ন বিভাগের দপ্তর প্রধানরা।
এসময় গত ৫ আগস্ট যশোরের জাবির হোটেলে অগ্নিকা-ে মৃতের সংখ্যা নিয়ে জটিলতা প্রসঙ্গে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, অগ্নিকা-ের পর হাসপাতাল জুড়ে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এসময় চিকিৎসকরা যে যেভাবে পেরেছে আহত রোগীদের সেবা করেছেন। তবে কার্যত সেদিন কোন শৃঙ্খলা ছিলো না। ফলে নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রার মেইনটেইন করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, পুলিশ না থাকায় লাশের ময়নাদতন্ত ছাড়ায় লাশ নিয়ে গেছে। সেসময় নানাবিধ ঝামেলার কারণে পরিচয় লিখে রাখাও সম্ভব হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক জানান, মোট ২১টি মরদেহের মধ্যে ১৩টি মরদেহের নাম পরিচয় জানা গেছে। এছাড়া ওইদিন ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জন রোগী ভর্তি হয়েছিলেন।
শহরের জলাবদ্ধতার বিষয়ে যশোর পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাবিদ হোসেন জানান, বিল হরিনা থেকে মুক্তেশ্বরী পর্যন্ত খাল পরিস্কার কাজ শেষ হয়েছে। সেখান থেকে পানি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ফলে পূর্বে জলাবদ্ধতা এখন আর থাকবে না। তিনি বলেন, দ্রুতই শহরের সকল সড়কের জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক ড. সুশান্ত কুমার তরফদার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতে সব থেকে জরুরি বিষয় খাদ্য। কোনভাবে খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি হলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। তাই কৃষকের উৎপাদন কাজ যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকে সকল বিভাগকে খেয়াল রাখতে হবে এবং কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে যেতে হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এজিএম ইছাহাক আলী জানান, বর্তমানে পল্লী বিদ্যুতের ১৪৫ মেগাওয়াট চাহিদা থাকলেও ১০০ থেকে ১২০ মেগাওয়াট সরবরাহ রয়েছে। যার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে।
জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, বর্তমানে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সকল থানা ও ফাড়িতে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। এসময় পুলিশকে সাধারণ মানুষের বন্ধু ভেবে অপরাধীদের দমনে সকলকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি।