ঢাকা অফিস
যশোরের বিভিন্ন এলাকায় ভৈরব ও চিত্রাসহ ছয়টি নদীর ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নয়টি সেতু নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি। তাদের দাবি, এসব সেতু নির্মাণে নিয়ম মানা হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পরামর্শ নেওয়া হয়নি, বরং মতামত উপেক্ষিত হয়েছে। এলজিইডির এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা জনস্বার্থপরিপন্থী। এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ আদালত ও সরকারপ্রধানের আদেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও দাবি জাতীয় কমিটির।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সংগঠনের সভাপতি হাজি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে এই সংক্রান্ত এক বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতিতে ওই সব সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ করে সংশ্লিষ্টদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন করে প্রকল্প চূড়ান্ত করার দাবি জানানো হয়।
সংগঠনটি আশঙ্কা করছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) মতামত উপেক্ষা করে সেতুগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হলে এসব নদীতে দিয়ে নৌযান চলাচল করতে পারবে না। নিকটভবিষ্যতে নদীগুলো শুকিয়ে পরিত্যক্ত হয়ে যাবে।
ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (ডব্লিউবিবিপি) আওতায় এলজিইডি যশোরে নয়টি সেতু নির্মাণ করছে। এগুলোর মধ্যে মনিরামপুরে টেকা নদীর ওপর একটি, মুক্তেশ্বরী নদীর ওপর দেড় কিলোমিটারের ব্যবধানে দুটি, শ্রী নদীর ওপর একটি, হরিহর নদের ওপর দুটি, সদর উপজেলার ভৈরব নদের ওপর একটি এবং বাঘারপাড়ার ভৈরব ও চিত্রা নদীর ওপর দুটি সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে।
নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতাদের অভিযোগ, নদ-নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র নেওয়ার বিধান থাকলেও এলজিইডি তা নেয়নি। উচ্চ আদালতের রায়ে সব নদীর আইনগত অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের পরামর্শও নেওয়া হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, পানির উপরিভাগ থেকে এসব সেতুর গার্ডারের নিচ পর্যন্ত উচ্চতা হওয়ার কথা নদীভেদে ১৬ ফুট থেকে ২৫ ফুট। কিন্তু নির্মাণাধীন সেতুগুলোর উচ্চতা সর্বনিম্ন ৪ দশমিক ৫৯ ফুট ও সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৫০ ফুট।
এলজিইডির এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা জনস্বার্থপরিপন্থী উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে নদীমাতৃক বাংলাদেশের সব নদী রক্ষার জন্য সরকারকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিবেশবান্ধব প্রধানমন্ত্রী নিজেও নদ-নদী রক্ষার ব্যাপারে আন্তরিক। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান হয়েও এলজিইডি সর্বোচ্চ আদালত ও সরকারপ্রধানের আদেশ লঙ্ঘন করছে।