করোনার নতুন ধরন আফ্রিকান ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে বিশ্বব্যাপী সতর্ক অবস্থা চলছে। বাংলাদেশেও এই নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন ঠেকাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর দেশব্যাপী কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে। ৪ জানুয়ারি দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর তথ্য অধিদফতরের এক তথ্য বিবরণীতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ১৫ দফা নির্দেশনার কথা জানানো হয়। নির্দেশনাসমূহ হচ্ছে : ওমিক্রন আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে।
সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে। নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। রেস্তোরাঁয় ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম লোক বসে খেতে পারবে। সব ধরনের জনসমাবেশ, পর্যটন স্থান, বিনোদনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার, সিনেমা হল/ থিয়েটার হল ও সামাজিক অনুষ্ঠানে ধারণক্ষমতার অর্ধেক বা তার কম লোক অংশ নিতে পারবে। মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে মাস্ক পরাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সেবাগ্রহীতা, সেবা প্রদানকারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরাসহ সকল স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। যারা এখনো কভিড টিকা নেননি, টিকাকেন্দ্র গিয়ে তাদের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। কভিডের উপসর্গ/লক্ষণযুক্ত সন্দেহভাজন বা নিশ্চিত কভিড রোগীদের আইসোলেশন এবং কভিড রোগীদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কভিডের লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিকে আইসোলেশনে রাখা এবং তার নমুনা পরীক্ষার জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে সহায়তা করতে হবে।
প্রচলিত কথায় আছে ‘সোজা আঙুলে ঘি ওঠে না’। জাতি হিসেবে আমাদের চরিত্রটাই যেন তেমন। নিজের ভালো পাগলে বুঝলেও এ জাতি বুঝতে চায় না। বিশ্বজুড়ে করোনার ‘ওমিক্রন’ নতুন করে কাপন সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় যখন কেউ ওমিক্রন প্রতিরোধ বিধি-নিষেধ মানছে না তখন স্বাস্থ্য অধিদফতর মাস্ক ব্যবহারসহ কিছু নিয়ম-কানন পলনের নির্দেশনা দিয়েছে। আমরা এ নির্দেশনাকে স্বাগত জানাই।
করেনাভাইরাস নতুন ভেরিয়েন্ট যে মহামারী তাতে আর কোন সন্দেহ নেই কারো। এর ভয়াবহতা নতুন করে ব্যাখ্যা করারও প্রয়োজন নেই। দীর্ঘ সময় ধরে সারা বিশ্ব চষে বেড়াচ্ছে এই ভাইরাস। হালে আগ্রাসন কিছুটা কম হলেও নতুন ভেরিয়েন্ট উঁকি দিচ্ছে। তাই বিশেষজ্ঞরা আগেভাগে সতর্ক করছেন।
আশার কথা হলো আমাদের দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু হার কমেছে। তাই বলে অসতর্ক থাকা যাবে না। কেননা যখন একটি দুর্যোগ জাতির ঘাড়ে চাপে তখন সেটি দিনক্ষণ দিয়ে চাপে না। যদি প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলো পালন করা যায় তাহলে দুর্যোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।
যদি সবাই নির্দেশনা অনুসরণ করে তাহলে অটোমেটেকলি এটা থেকে রিলিফ পাওয়া যাবে। ওমিক্রন প্রতিরোধের করণীয় বিষয়ে সর্বপ্রথম গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে এবং তাদেরকে করণীয় বিষয়ের সাথে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।