চোরাচালনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিলেও তা থেমে নেই। বিভিন্ন কৌশলে এক শ্রেণির মানুষ এ অবৈধ কাজটি করেই যাচ্ছে। তাদের আচরণ দেখলে মনে হয় তারা সব কঠোরতাকে ড্যামকেয়ার ভাব দেখাচ্ছে। বিজিবি ও পুলিশ বিভাগকে এর বিরুদ্ধে কঠোর ভূকিকা নিতেও দেখা যাচ্ছে, কিন্তু তারপরও কেন এ অবস্থা তা ভাববার বিষয়। এ দেশে সাধারণত মাদক ও সোনা চোরাচালান হচ্ছে বেশি। বহনকারী বা মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তবু চোরাচালানের স্রোত থামছে না।
সোনা চোরাচালানের একটি খবর ২১ এপ্রিল দৈনিক কল্যাণে প্রকাশ হয়েছে। খবরটি হলো যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার সীমান্তবর্তী পুটখালি গ্রামে অভিযান চালিয়ে ১৫টি সোনার বারসহ (এক কেজি ৭৪৯ গ্রাম) মনিরুল ইসলাম (৩৭) নামে এক পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি সদস্যরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ দিকে তাকে আটক করা হয়। উদ্ধকৃত সোনার বাজার মূল্য ১ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আটককৃত মনিরুল জানায়, সে সোনার বারগুলো পুটখালি ইব্রাহিমের নিকট হতে সংগ্রহ করে পুটখালী সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে পাচার করতে চেয়েছিল। বিনিময়ে সে মাত্র এক হাজার টাকা পাবে বলে জানায়। ‘কূলে এসে ডুবিল তরী’র মতো সামান্য পথ থাকতে ধরা পড়েছে।
সোনা চোরাচালান থেমে নেই এ জন্য বলছি যে, প্রায় শোনা যায় পাচার করার জন্য আনা সোনা ধরা পড়েছে। যারা এর সাথে জড়িত তারা এতটাই অপ্রতিরোধ্য যে বার বার ধরা পড়লেও তারা থেমে নেই। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে পায় সোনার চালান আটক করা হয়। আমরা মনে করি অহেতুক চুনো পুটির পেছনে দৌঁড়িয়ে সোনা চোরাচালান দমনের কাক্সিক্ষত সফলতা পাওয়া যাবে না, যতক্ষণ না এর হোতাদের দমন না করা যাবে। যারা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে, মানুষের অকল্যাণে সোনা চোরাচালান ব্যবসা করেও সমাজের মধ্যমণি হয়ে হয়ে বসে আছে তাদের কালো হাত আগে ভাঙতে হবে। পালের গোদাকে সোজা করতে না পারলে অন্য কেউ সোজা হবে না। একজন ধরা পড়বে তো শতেকজন উদয় হবে। বেকার জীবনে লোভনীয় পরিশ্রমিকে কাজের সুযোগ পেলে তারা এদিকে ঝুঁকবেই। মনিরুল মাত্র এক হাজার টাকার জন্য এ ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করছিল। এ কারণে বিনিয়োগকারীদের পিঠে বাড়ি পড়লে চুনোপুটি চোরাব্যবসায়ীদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাবে না। যদি পালের গোদারা নির্বিঘœ থাকে তা হলে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও চোরাচালান চলতে থাকবে। চোরাচালানীরাতো হিতাহিত জ্ঞান শূন্য মানুষ নামের অদ্ভুত প্রাণি। তারা চোরাচালান করতে গিয়ে ধরা পড়লে তাদের জীবন শেষ এ কথাটি তাদের মাথায় থাকে না। এ ক্ষেত্রে আমাদের কথা হলো সোনা চোরাচালানের শীর্ষের শক্তিকে আগে প্রতিহত করা হোক।