নিজস্ব প্রতিবেদক
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার ইমিগ্রেশন ভবন থেকে পুলিশ কনস্টেবল শামিম রেজা সাজুর (৩৬) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আসামি করা হয়েছে পুলিশের সাত সদস্যকে।
সাজু মৃত্যুর এক মাস পর নিহত পুলিশ সদস্যের বাবা বাদী হয়ে মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা দর্শনা থানা আমলি আদালতে মামলাটি করেন। আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দায়িত্ব দিয়েছেন।
মামলায় আসামিরা হলেন এএসআই তারেক মাহমুদ, লাভলুর রহমান, মিঠুন হোসেন, সহিদুল ইসলাম, কনস্টেবল মেহেদী হাসান ও সোহেল রানা এবং ইমিগ্রেশন বিভাগের ইনচার্জ এসআই রমজান আলী।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী নাজমুল হাসান লাভলু বলেন, ‘বাদীর অভিযোগ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালত অভিযোগ গ্রহণ করে তা তদন্তে সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছেন।’
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ঝুটিয়াডাঙ্গা গ্রামের হাসেম আলী ফরাজীর ছেলে সাজু দর্শনা জয়নগর আন্তর্জাতিক চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। গত ১৮ এপ্রিল সকালে চেকপোস্টের নতুন ভবনের দোতলার একটি কক্ষ থেকে সাজুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায় দর্শনা থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছিল।
অভিযোগে মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, তার ছেলে সাজু বিবাহিত এবং তার পাঁচ বছর বয়সি একটি ছেলে আছেন। পুত্রবধূ (সাজুর স্ত্রী) একমাত্র সন্তান নিয়ে তার বাড়িতে এবং ছেলে সাজু চেকপোস্টের নতুন ভবনের দোতলায় অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে থাকতেন। সংসার জীবনে তাদের কোনো অশান্তি ছিল না।
দর্শনা ইমিগ্রেশনে বদলি হওয়ার পর থেকেই সাজু বৈষম্যের শিকার ছিলেন। বিভিন্ন খুঁটিনাটি কারণে আসামিরা তাকে মানসিক চাপে রাখতেন। কারণে-অকারণে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতেন। এর প্রতিবাদ করায় ওই ছয়জন তাকে খুন করার হুমকি দিতেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৭ এপ্রিল মামলার আসামিরা সাজুকে খুন করার হুমকি দেয়। বিষয়টি নিজ গ্রামের বাসিন্দা সহকর্মী সোহেল রানাকে জানান তিনি। সোহেল বিষয়টি সাজুর বাড়ির কাউকে না জানিয়ে আসামিদের জানিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় গত ১৭ এপ্রিল রাতে সাজুকে হত্যা করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে লাশ ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার ওসি মুহাম্মদ শহীদ তিতুমীর বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। সিআইডি প্রতিবেদন দিলে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।