কল্যাণ ডেস্ক: তিন বছর আগে শুরু হয়েছিল করোনার মহামারি থাবা। ২ বছরের চেষ্টায় অতিমারিকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও করোনাভাইরাস একেবারে নিঃশেষ হবে না কখনোই। এই ভাইরাস সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে হবে আমাদের। বছর শেষে নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন বিএফ.৭। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নতুন এ ভাইরাসকে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭-এ ভাইরাসের ভয়াবহতা হলো, এতে সংক্রমিত একজন রোগী একসঙ্গে ১৮ থেকে ২০ জনের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই মাস্ক পরা ও ভিড় বা জনবহুল জায়গা এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের ৯০ শতাংশেরও বেশি মানুষ টিকার দুটি ডোজ নিলেও মাত্র ২৭ শতাংশ মানুষ তৃতীয় ডোজ নিয়েছেন। তাই নতুন সংক্রমণ রুখতে তৃতীয় ডোজের ওপর জোর দিচ্ছে সরকার।
উপসর্গ
বিএফ.৭-এ ভাইরাসের উপসর্গ কভিডের অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের মতোই। এটার ভয়াবহতা সম্পর্কে পুরোপুরি জানা যায়নি। হবে টিকা না নেওয়া ব্যক্তি এবং যাদের অন্য রোগ আছে কিংবা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মধ্যে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। গলাব্যথা, হাঁচি, সর্দি, নাক বন্ধ, কফ ছাড়াও কথা বলতে অসুবিধা, শারীরিক ক্লান্তি ইত্যাদি দেখা যাচ্ছে বিএফ.৭-এ আক্রান্তদের মধ্যে। এ ছাড়া গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল উপসর্গ যেমন বমি এবং ডায়রিয়াও দেখা যাচ্ছে। এ উপসর্গগুলো দেখা দিলেই সতর্ক হন।
সাবধানতা
যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, তাদের বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। ওমিক্রনে বিএফ.৭-এ আক্রান্ত হলে শরীরে কোন কোন উপসর্গ প্রকাশ পায়, সে সম্পর্কে জানুন এবং সচেতন থাকুন। টিকার তৃতীয় ডোজ নেওয়া না থাকলে যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে নিন। এরপর দ্বিতীয় বুস্টার অর্থাৎ চতুর্থ ডোজও চলে এসেছে, তৃতীয় ডোজ নেওয়া থাকলে চতুর্থ ডোজ টিকা নিন। যাদের নিয়মিত বাইরে বের হতে হয় অবশ্যই সুরক্ষা সামগ্রী যেমন মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। অন্যদের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলতে হবে। শীতের এই মৌসুমে ঘোরাঘুরি, উৎসব, অনুষ্ঠান বেড়ে যায়। কিন্তু যে কোনো রকম জনসমাগম, উৎসব, অনুষ্ঠান, ভিড় এড়িয়ে চলুন। উৎসব অনুষ্ঠান করতে হলে সীমিত পরিসরে অল্পসংখ্যক মানুষকে নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
চিকিৎসা
সাধারণত সুস্থ ব্যক্তির জন্য ওষুধের প্রয়োজন হয় না। ঘরোয়া পরিচর্যায় এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে যায়। প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে। মসলা চা, স্যুপ, ডাবের পানি, মৌসুমি ফলের জুস বেশি করে খান। বাড়িতে একঘরে আলাদা থেকে হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে চলুন। রোগীর অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের অসুখ থাকলে বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, হার্টের রোগীদেরও চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকা উচিত। রোগের লক্ষণ তীব্র হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। করোনা-পরবর্তী দুর্বলতাও সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী হয়। ব্যক্তিভেদে চার থেকে ছয় মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। তাই করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও সঠিক পুষ্টি, নিয়মিত শরীরচর্চা করে যেতে হবে। ভিটামিন ডি ও সি-সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে।
আরও পড়ুন: গর্ভবতী নারীর অতিরিক্ত রসুন খাওয়ায় যে ক্ষতি