এসএম মিজানুর রহমান শ্যামনগর (সাতক্ষীরা): সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আড়পাঙ্গাসিয়া ও মাহেন্দ্রসিল গ্রামের সাতটি পয়েন্টে কাঠ জ্বালিয়ে চিংড়ি মাছের শুঁটকি তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সুন্দরবনসহ উপকূলীয় এলাকার নদ-নদী ও খাল থেকে সংগ্রহ করা ছোট বড় এসব চিংড়ি চাটাইয়ের ওপর রেখে নিচে রাখা কাঠে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। প্রতিদিন এভাবে ২-৩ টন মাছ পুড়িয়ে শুঁটকি করা হচ্ছে এসব পয়েন্টে। পরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এসব মাছ শুঁটকি হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাঠ জ্বালিয়ে কৃত্রিম উপায়ে শুঁটকি তৈরি করা হচ্ছে। এতে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণে কাঠ পোড়ানোয় হুমকির মধ্যে পড়ছে পরিবেশ। তৈরিকৃত শুঁটকি মাছও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আড়পাঙ্গাসিয়া গ্রামের মাকসুদুল আলম মিলন বলেন, জ্বালানোর বদলে রোদে মাছ শুকালে গুণগতমান যেমন বজায় থাকে, তেমনি পরিবেশেরও ক্ষতি হয় না। কিন্তু গত তিন বছর ধরে রাস্তার পাশে লোকালয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রভাব খাটিয়ে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উপকূলীয় নদী ও খাল থেকে ধরা ছোট চিংড়ি মাছ কাঠ জ্বালিয়ে পোড়ানো হচ্ছে।
আটুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সালেহ বাবু বলেন, আমার এ বিষয়ে জানা ছিল না। এখনই জানলাম। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
সাতক্ষীরা জলবায়ু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী বলেন, কাঠ জ্বালিয়ে শুঁটকি মাছ তৈরি করার প্রক্রিয়া ইটভাটার চেয়েও ভয়াবহ। শুঁটকি আগে তৈরি হতো সাগর পাড়ে। এখন সেটা লোকালয়ে এসেছে। এসব মাছ প্রাকৃতিকভাবে শুকানো দরকার। তাহলে সেটা স্বাস্থ্যসম্মত হয়, পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকারক হয় না।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন হুসেইন শাফায়েত বলেন, যে প্রক্রিয়ায় চিংড়ির শুঁটকি বানানো হচ্ছে তাতে এই শুঁটকি খেলে লিভারসহ পরিপাকতন্ত্রের ভয়াবহ ক্ষতি হবে। কাঠ ও মাছের সম্মিলিত ধোঁয়ায় স্থানীয়দের শ্বাসকষ্টসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হবে।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির বলেন, আমরা কোনোভাবেই কাঠ পোড়ানোকে সমর্থন করি না। কাঠ পোড়ালে বনভূমি কমে যাবে। কাঠ পুড়িয়ে মাছ শুকানো এটা পরিবেশের খুবই ক্ষতি দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।