নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ব্যবসায়ী কামরুল ইসলামের মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এঘটনায় থানায় মামলাও হয়নি।
গত ৭ মার্চ শবেবরাতে রাত ৯ টার দিকে নামাজ আদায়ের জন্য বাড়ির পাশের মসজিদে যান। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিলো। ভোর ৪ টার দিকে খুলনার ফুলতলায় তার নানাবাড়ি এলাকা থেকে স্বজনদের কাছে ফোন আসে কামরুল ইসলাম অসুস্থ অবস্থায় নদীর পাড়ে রয়েছে। উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। পরিবারের লোকজন তাকে ভোর ৫ টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৬ টায় তার মৃত্যু হয়।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ব্যবসায়ী কামরুলের লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ওইদিনই তার জানাজার নামাজ শেষ করে দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মৃত কামরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত মামলা করা হয়নি। এ ছাড়া তার মৃত্যুর কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও ভিসেরা প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা সম্ভব হবে। তবে এরই মধ্যে তারা তদন্তকাজ শুরু করেছেন। সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের ডা. বাবলু কিশোর বিশ্বাস জানান, বুধবার দুপুরে লাশ ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তার ফুসফুস ও কিডনিতে জমাট রক্ত পাওয়া গেছে। এটা বিষক্রিয়া বা অন্য কারণেও হতে পারে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তার শরীরের বিভিন্ন নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যরা কেউ মুখ খুলতে রাজি হয়নি। তবে তার কাছের লোকজন জানায়, কামরুলকে পরিকল্পিতভাবে বিষ জাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বাড়ি থেকে নামাজ পড়ার জন্য বের হলেও তাকে খুলনার ফুলতলা থেকে উদ্ধার করা হয়। কারা কিভাবে তাকে ফুলতলা নিয়ে গেছে সেটা বুঝতে পারছে না।
নাম না বলার স্বার্থে কামরুলের বন্ধুরা জানান, ওইদিন রাত ১১টা ১০মিনিটের দিকে দড়াটানা মোড়ের চায়ের দোকান থেকে কলা খায় কামরুল। এসময় তিনি বলেন, এটাই আমার তোদের সাথে শেষ খাওয়া, খুব তাড়াতাড়ি মারা যাবেন বলেও উপহাস করেন তিনি। একই কথা তার পরিবারের মা ও মেয়েকে বলেন তিনি। তিনি অর্থনৈতিক সংকটে ছিলেন বলেও একাধিক সূত্র জানান।