কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে চার ঘণ্টার ব্যবধানে পাগলা কুকুরের কামড়ে পথচারী ও গ্রামবাসীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত শহরের মধুগঞ্জ বাজার, বলিদাপাড়া ও বড় রায়গ্রামসহ পাশর্^বর্তী এলাকার মানুষকে কামড়ে জখম করে। এ পর্যন্ত ২০ জনকে কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের ঝিনাইদহ হাসপাতালে রেফার্ড ও বাকিরা বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছে।
এদিকে গণহারে কুকুরে কামড়ানোর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে এক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। তিনি হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা পর্যবেক্ষণ ও ভ্যাক্সিন সরবরাহের বিষয়টি দেখভাল করেন। উল্লেখ্য, গত ছয় মাস আগেও একদিনেই তিন ঘণ্টার ব্যবধানে ৩৫ জন ক্ষ্যাপা কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছিল।
সোমবার সকালে কালীগঞ্জ উপজেলার রায়গ্রাম থেকে প্রথমে সাদা রংয়ের একটি কুকুর হঠাৎ করেই পথচারী, দোকানি, স্কুলছাত্রী ও শিশুদের কামড়াতে থাকে। স্থানীয়রা কুকুরটিকে ধাওয়া করলে পরে বলিদাপাড়া, নিশ্চিন্তপুর ও হেলাই গ্রামের মানুষকে কামড়িয়ে জখম করে।
হাসপাতালে ভর্তি শহরের বলিদাপাড়ার রাখি বেগম নামে এক গৃহবধূ জানান, সকালে বাড়ির পাশে কাজ করার সময় হঠাৎ একটি কুকুর এসে আমার উপর হামলে পড়ে। পরে প্রতিবেশিরা আমায় কুকুরের কামড় থেকে রক্ষা করে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কালীগঞ্জ শহরের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জিত কুমার কালু জানান, বেলা ১১টার দিকে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসা মাত্রই একটি কুকুর আমার পায়ে কামড়ে ধরে। এ সময় কুকুরের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গিয়ে আমার দুই হাতের ছয় আঙুল ক্ষতবিক্ষত হয়। কালীগঞ্জ শহরের সংরক্ষিত কাউন্সিলর শামছুন্নাহার বীনা জানান, তার এলাকায় প্রায় ১০ জনের মতো নারী পুরুষকে পাগলা কুকুরে কামড়িয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের ডাক্তার ইমরান হোসেন জানান, কুকুরে কামড়ানো অবস্থায় দুপুর পর্যন্ত ১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুকুরে কামড়ানোর বাইট মার্ক রয়েছে। তাদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ভ্যাক্সিন দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে দুইজনের কামড়ের আঘাত বেশি গুরুতর হওয়ায় তাদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। কুকুরে কামড়ানো রোগীদের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাক্সিন মজুদ রয়েছে বলেও জানান এ চিকিৎসক।