নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর জেলা বিএনপির অনশন কর্মসূচিতে দলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলন বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, সময়ক্ষেপণ হচ্ছে মাত্র কিভাবে তিনি (শেখ হাসিনা) বিদায় নিবেন। কয়টি সুটকেস সাথে নিবেন, তার সফর সঙ্গী কারা হবেন। শুধু তার দেনদরবার চলছে। বিচলিত কিংবা ভয় পাবার কারণ নেই। ঐক্যবদ্ধ থেকেই সর্বোচ্চ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা ক্ষমতার পালাবদল করবো ইনশাআল্লাহ।
গুরুতর অসুস্থ দলীয় প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপি গণ-অনশন কর্মসূচির আয়োজন করে। দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম। শনিবার সকাল ১০ টা থেকে অনশন কর্মসূচি শুরু হয়ে দুপুর আড়াইটায় শেষ হয়। পরে অনশনে অংশ নেওয়া নেতকার্মীরা একসাথে জোহরের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত করা হয়।
অনশন কর্মসূচিতে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরও বলেন, আজ বিএনপির দাবির সাথে সমাজের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ একাত্মতা প্রকাশ করেছে। এই দাবি শুধু বিএনপির একার নয়। এই দাবি দেশের সমগ্র জনগণের এবং সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মানুষের। আমরা রাজপথে শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন করছি, করে যেতে চায়। রাজপথ এবং কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ থাকবে, কি থাকবে না সেটি নির্ভর করবে সরকারের আচরণের ওপর। আমরা অতীতেও কাউকে আঘাত করিনি, আগামীতে করবো না। কিন্তু কেউ যদি আমাদের আঘাত করতে চায়, তার প্রত্ত্যুতর দেবার জন্য আমরা পূর্ণ প্রস্তুত আছি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিইসি যতই বলুক না কেন কোন রাজনৈতিক দল ভোটে আসুক বা না আসুক সেটি তাদের বিবেচ্য বিষয় না। কিন্তু বিএনপি ছাড়া আগামীতে দেশে কোন নির্বাচন হবে না। কারণ জনগণ বিএনপি ছাড়া কোন নির্বাচন হতে দেবে না।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (তলে তলে আপোষ হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের) এমন বক্তব্যে তিনি বলেন, তলে তলে ষড়যন্ত্র, অবৈধ কাজ হয়, নোংরামী হয় কিন্তু রাজনীতি হয় না। রাজনীতি যদি করতে হয়, তাহলে প্রকাশ্যে করতে হয়। সেই রাজনীতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল করছে এবং করবে। আমরা শহীদ জিয়ার আর্দশের সৈনিক।
আমাদের শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ। কেউ যদি ভেবে থাকেন কোন বিদেশী বন্ধু ও প্রভুর আশায় বসে আছি তাহলে তিনি বোকার স্বর্গে বাস করছেন। সেই জনগণের সমর্থন নিয়ে ও তাদের শক্তির ওপর ভর করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ক্ষমতার পালাবদল করবো ইনশাআল্লাহ।
জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, প্রকৌশলী টি এস আইয়ূব, আবুল হোসেন আজাদ, সাবিরা নাজমুল মুন্নি, জেলা কমিটির সদস্য গোলাম রেজা দুলু, অ্যাড. মো. ইসহক, আব্দুস সালাম আজাদ, মিজানুর রহমান খান, মো. মুছা, এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলু, মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, অ্যাড. হাজী আনিছুর রহমান মুকুল, কাজী আজম, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সেতু, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মাসুম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. শহীদ ইকবাল হোসেন, চৌগাছা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জহুরুল ইসলাম, কেশবপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মশিয়ার রহমান, অভয়নগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক কাজী গোলাম হায়দার ডাবলু, বিএনপি নেতা শহিদুল ইসলাম, আসাদুজ্জামান জনি, আব্দুল হালিম ”ঞ্চল, আব্দুল হাই, কুতুব উদ্দিন বিশ্বাস, মশিয়ার রহমান, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রাশিদা রহমান, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, জেলা ছাত্রদলে সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম, এখলাস হোসেন প্রমুখ।
জেলা বিএনপির অনশন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহকারী মহাসচিব নূর ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জান, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি জেলা শাখার যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক আসাদুজ্জামান শাহীন, চিকিৎসক নেতা তানভীর হায়দার তমাল।
পরে যশোরের মুক্তিযোদ্ধা হাসানুল করিম কামাল, আক্তার হোসেন খান, ফেরদৌসী বেগম অনশন কর্মসূচির প্রধান অতিথি অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সভাপতি নার্গিস বেগমসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে ফলের জুস পাণ করিয়ে অনশন ভঙ্গ করেন।