কল্যাণ ডেস্ক: ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্র থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে রাশিয়ার বাহিনী। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। শঙ্কা, আজই কি কিয়েভের পতন ঘটবে।
ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রাশিয়াকে সতর্ক করেছে, হতাহতের সংখ্যা ‘ক্রেমলিনের প্রত্যাশিত বা স্বীকার করার চেয়ে ভারী ও বৃহৎ হতে পারে।
দেশটির এই মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ‘এখনো রাশিয়া ইউক্রেনের আকাশসীমার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। যা রাশিয়ান বিমান বাহিনীর কার্যকারিতাকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করে।’
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী সারা দেশে কঠোর প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ, পূর্ব এবং উত্তরের প্রধান ইউক্রেনীয় শহরগুলির চারপাশে যুদ্ধ চলছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, আজ স্থানীয় সময় সকালে কিয়েভের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
কিয়েভের নগর কর্তৃপক্ষের মতে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র সেখানকার একটি আবাসিক ভবনে আছড়ে পড়ে। আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র রাজধানীর ঝুলিয়ানি বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরিত হয়েছে বলে রিপোর্ট করেছে রয়টার্স।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রুশ সংবাদমাধ্যম ইন্টারফ্যাক্স ও স্পুটনিক জানিয়েছে, রুশ সেনারা ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় জাপোরিঝিঝিয়ায় মেলিটোপল শহর দখল করেছে। মেলিটোপল হল ইউক্রেনের মূল বন্দর মারিউপোলের কাছে একটি মাঝারি আকারের শহর। যেখানে অন্তত দেড় লাখ মানুষ বাস করেন।
রাজধানীতে, মাইডান স্কয়ারের কাছে একটি বড় ধরণের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং শহরের ত্রয়েশ্চিনা এলাকায় একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, কিয়েভের ওপর গোলা হামলার শব্দ এতোটাই তীব্র ছিল যে শহরের কেন্দ্র থেকে কয়েক মাইল দূর পর্যন্ত শব্দ পেয়েছেন তারা।
কিয়েভ ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলছে, শহরের চিড়িয়াখানার কাছে এবং শুলিয়াভকা শহরের আশেপাশে ৫০টিরও বেশি বিস্ফোরণ এবং ভারী মেশিনগানে গোলাগুলি হয়েছে।
ফক্স নিউজের সংবাদদাতা ট্রে ইংস্ট বলেছেন, কিয়েভ ‘এই মুহূর্তে একাধিক দিক থেকে’ আক্রমণের শিকার হয়েছে।
এদিকে, শনিবার এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জনগণকে বলেছেন, রাজধানী কিয়েভ এখনো তাদের নিয়ন্ত্রণে এবং লড়াই চলছে।
এছাড়া এর মধ্যে নতুন সতর্ক বার্তা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। মাখোঁ বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে দীর্ঘ যুদ্ধের জন্য বিশ্বকে অবশ্যই প্রস্তুত হতে হবে।
ফ্রান্সের বার্ষিক কৃষি মেলায় এই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আজ সকালে আপনাদের একটি কথা বলতে পারি-এই যুদ্ধ দীর্ঘ হবে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘এই সংকট স্থায়ী হবে, এই যুদ্ধ স্থায়ী হবে ও এর সঙ্গে আসা সমস্ত সংকটের দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি হবে। আমাদের অবশ্যই প্রস্তুত থাকতে হবে।’