নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের অভয়নগরের বহুলালোচিত তরিকুল ইসলাম হত্যা মামলা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (পদ স্থগিত) আসাদুজ্জামান জনি। তাকে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে শোন-এ্যারেস্ট মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকার বুধবার এ আবেদনের শুনানি শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনজুমান আরা বেগম এ আদেশ দিয়েছেন। আসাদুজ্জামান জনি অভয়নগরের গুয়াখোলা গ্রামের কামরুজ্জামান মজুমদারের ছেলে।
সূত্র মতে, গত ২২ মে যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের ডহর মশিয়াহাটী গ্রামে কৃষক দলের নেতা তরিকুল ইসলামকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত তরিকুল ইসলাম নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড ধোপাদী গ্রামের মৃত ইব্রাহিম সরদারের ছেলে। তিনি একজন ঘের ব্যবসায়ী ও নওয়াপাড়া পৌর কৃষক দলের সভাপতি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, অভয়নগরের মশিয়াহাটী গ্রামে মাছের ঘের রয়েছে তরিকুল ইসলামের। এই ঘের নিয়ে একটি গ্রুপের সঙ্গে তার বিরোধ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই গ্রুপের লোকজন তরিকুলকে ডহর মশিয়াহাটী গ্রামের মিন্টু বিশ্বাসের বাড়ি ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে ঘেরের টাকার ডিট নিয়ে বিরোধের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ৬-৭ জন তরিকুলকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে তারা স্থানীয় বাজারের কয়েকটি দোকানে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর মিন্টু বিশ্বাসের বাড়ির লোকজনও পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ৮টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানানা, মাছের ঘের নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই এসএম রফিকুজ্জামান টুলু বাদী হয়ে ১১ জনের নামউল্লেখসহ অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি অভয়নগর থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ মামলার অন্যতম আসামি পলাশ মল্লিককে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। পলাশ মল্লিক এ হত্যাকা-ের সাথে নিজে ও অপর আসামিদের নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দেয়।
জবানবন্দিতে সাবেক বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনি এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আছে মর্মে গত ২৫ অক্টোবর আদালতে শোন-এ্যারেস্টের আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক মঞ্জুরুল হক ভুইয়া। বুধবার আসামি জনির উপস্থিতিতে শোন-এ্যারেস্টের শুনানি শেষে বিচারক আবেদন মঞ্জুর করে গ্রেফতার দেখানোর এ আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে, তরিকুল হত্যাকা-টি ভিন্ন খাতে নিতে বিএনপি নেতা (পদ স্থগিত) জনি বহু চেষ্টা করেন। তিনি ঘটনায় জড়িত প্রচার করে ওই এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি ঘরে আগুন লাগাতে উস্কানি দেন। এছাড়া খুনে জড়িতদের গ্রেফতারে জনি নিজেই বিক্ষোভ মিছিল করেন। যাতে জনসাধারণ ও প্রশাসন তার সন্দেহ না করে।
