আবদুল কাদের
বিএনপির জাতীয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান সুদৃঢ করতে সক্ষম হয়েছেন যশোরের সন্তান অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। বর্তমানে তিনি দলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের (খুলনা বিভাগ) দায়িত্ব পালন করছেন। তার পিতা তরিকুল ইসলাম ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। পারিবারিকভাবে দলে আসা অমিত নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতায় বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে পেয়েছেন গ্রহণযোগ্যতা। খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের জনপ্রিয়তা। শুধু খুলনা বিভাগ নয়, এখন সরকার বিরোধী আন্দোলনে রাজধানীতেও সমান সক্রিয় রয়েছেন তিনি। রাজনীতির ময়দানে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতাদের সামনের কাতারে রয়েছেন তিনি। এই আন্দোলনে দ্বিতীয় প্রজন্মের নেতাদের ওপরেই দলটির কর্মী-সমর্থকদের নির্ভরতা এখন সবচেয়ে বেশি।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে মশিউর রহমান যাদু মিয়া, সাইফুর রহমান, কেএম ওবায়দুর রহমান, মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলামসহ অনেকেই এখন প্রয়াত। জীবিতদের মধ্যেও অধিকাংশই এখন প্রবীণ ও অশীতিপর। তাদের কেউ কেউ রাজনীতি থেকে অবসরও নিয়েছেন। প্রয়াত ও অবসর নেওয়া রাজনীতিবিদদের সন্তানদের অনেকেই এখন দলটির হয়ে রাজনীতি করছেন।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বদিউল আলম মজুমদার সম্প্রতি গণমাধ্যমে বলেন, ‘বিএনপিতে এখন অনেক মেধাবী তরুণ যুক্ত হয়েছেন। নানা বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতা আছে। সামনের দিনে প্রযুক্তিসহ অনেক বিষয়েই আমরা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হব। এসব ক্ষেত্রে নতুন এ নেতৃত্ব ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি। তাদেরকে সুযোগ দেয়া হলে গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বিএনপিও আরো শক্তিশালী হবে। বর্তমানে যোগ্যতাসম্পন্ন অনেক তরুণ রাজনীতিতে এসেছে। তবে শুধু বিএনপিই নয়, সব দলেই এখন তরুণদের গুরুত্ব দিতে হবে। এতে করে দলগুলোয় আধুনিকায়ন হবে।
যশোর নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌরসভার মেয়র মারুফুল ইসলাম জানান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত অল্প সময়ে দলে স্থান করে নিয়েছেন। শুধু যশোর বিএনপিতে নয়, কেন্দ্রীয় বিএনপির এখন পরিচিত মুখ তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সময়ের প্রভাবশালী সদস্য প্রয়াত তরিকুল ইসলাম। দল ক্ষমতায় থাকাকালে বিভিন্ন সময়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ, সমাজকল্যাণ এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তার ছেলে ঢাকা বিশ্বব্যিালয়ের ছাত্র অনিন্দ্য ইসলাম অমিত প্রথমে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তাকে খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। মূলত খুলনা বিভাগীয় বিএনপির নেতৃত্ব তার হাতে। ইতিমধ্যে নিজের যোগ্যতায় দলের তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে অবস্থান শক্ত করেছেন তিনি। আর যশোর জেলা বিএনপির রাজনীতি এখন অমিত নির্ভর। তার নেতৃত্বে চলছে আন্দোলন সংগ্রাম। দলের নেতাকর্মীদের বিপদে সব সময় পাশে থেকে খোঁজখবর নেন তিনি। যেকারণে যশোরে তার রয়েছে একক আধিপত্য।
এব্যাপারে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, আমার বাবা বরাবরই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লড়াই করেছেন। জীবনভর অনাচারের বিপক্ষে ও গণতন্ত্রের পক্ষে সংগ্রাম করে গেছেন। জাতীয়তাবাদী রাজনীতিই ছিল তার আদর্শ এবং সেই আদর্শে আমৃত্যু ছিলেন। তার সন্তান হিসেবে আমিও ঠিক সে পথটাই অনুসরণ করছি। দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা তাদের প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে দল পরিচালনা করছেন। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরাও যে যার জায়গা থেকে কাজ করে যাচ্ছি।
যশোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, প্রয়াত তরিকুল ইসলাম ছিলেন যশোর বিএনপির অভিভাবক। তার মৃত্যুর পর সেই জায়গা দখল করেছেন তারই ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। বর্তমান সরকার আমাদের নেতাকর্মীদের নামে শত শত মিথ্যা মামলা করেছেন। অমিত নিজেও কমপক্ষে ৮০টি মামলার আসামি। এরপরও তিনি সবার খোঁজখবর রাখেন। যেকারণে দলে তার অবস্থান খুবই শক্ত। শুধু যশোর বা খুলনা বিভাগ নয়, রাজধানী কেন্দ্রীক বর্তমান সময়ে বিএনপি সরকার পতনের দাবিতে যে আন্দোলন করছে তারও প্রথম সারিতে রয়েছেন অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খান বলেন, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত যশোর বিএনপির অভিভাবক। তার নেতৃত্ব নিয়ে আমাদের কারো মধ্যে কোন দ্বিধা নেই। নিজের যোগ্যতা ও দক্ষতায় তিনি বিএনপির সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিজের গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ রেখেছেন। তিনি একাধারে দক্ষ সংগঠক, মিষ্টভাষী ও সুবক্তা।
যশোর নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌরসভার মেয়র মারুফুল ইসলাম জানান, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত অল্প সময়ে দলে স্থান করে নিয়েছেন। শুধু যশোর বিএনপিতে নয়, কেন্দ্রীয় বিএনপির এখন পরিচিত মুখ তিনি।