কল্যাণ ডেস্ক
দেশের ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় বিচ্ছিন্ন সংঘাত ছাড়া মোটামুটি উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলছে। মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টায় শুরু হওয়া ভোট গ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট গ্রহণের প্রথম দুই ঘণ্টায় ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
১৫৬ উপজেলার মধ্যে ২৪ উপজেলায় ভোট হচ্ছে ইভিএমে এবং বাকিগুলোয় ব্যালট পেপারে ভোট নেয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে ১৬১ উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিভিন্ন কারণে ৫ উপজেলায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে। প্রতিবেদন লেখার সময় চার ঘণ্টার ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে।
যশোরের ঝিকরগাছা, চৌগাছা ও শার্শা
তিন উপজেলায় বিরতিহীনভাবে ইভিএম-এ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ চলছে। ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭১১ জন ভোটার ২৯৩টি কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। তবে সকাল থেকেই ভোটার উপস্থিতি কম। প্রথম ঘণ্টায় ভোট পড়েছে প্রায় পাঁচ শতাংশ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের সংখ্যা বাড়বে এবং এই নির্বাচনে কোন কারচুপির শঙ্কা নেই বলে প্রার্থীরা জানিয়েছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, যশোরে শার্শায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৯ হাজার ১১১ জন। ঝিকরগাছায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৩ হাজার ১৬৮ জন। চৌগাছায় উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ২ জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ জন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী রয়েছেন। এ উপজেলায় ভোটার ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩২ জন। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হলো ভোটার উপস্থিতি একেবারেই কম। তবে যেসব ভোটাররা কেন্দ্র এসেছেন তারা জানিয়েছেন ভালোভাবেই ভোট সম্পন্ন করতে পেরেছেন।
ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুল কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, আমার কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ১৩৩। প্রথম ঘন্টায় ১৫৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। যা মোট ভোটারের ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
মাগুরার মহম্মদপুর ও শালিখা
দুই উপজেলাতেই এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট চলছে। ভোটার উপস্থিতি সকাল থেকে কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। ভোটকে নির্বিঘ্ন করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। মহম্মদপুরে ১৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে ৭ জন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আনারস প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মান্নান এবং শালিক প্রতীকের প্রার্থী কবিরুজ্জামান কবিরের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার আশা করছেন ভোটাররা।
অন্যদিকে শালিখায় নির্বাচনে মোট ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে ৩ জন চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে আনারস প্রতীকের প্রার্থী শ্যামল কুমার দে ও মোটরসাইকেলের প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল ইসলামের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলছেন ভোটাররা।
মুহাম্মদপুরের আটটি ইউনিয়নের ৬৪ টি ভোট কেন্দ্রে ১ লাখ ৮১ হাজার ৩৬২ জন ভোটার এবং শালিখা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ৫৪ টি ভোট কেন্দ্রে ১ লাখ ৪৪ হাজার ২৫৫ জন ভোটারের জন্য ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাগেরহাটের চিতলমারী, মোল্লাহাট ও ফকিরহাট
তিন উপজেলার ১২৪টি কেন্দ্রে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের আগেই ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে শুরু করে।
নির্বাচন অফিসের তথ্য অনুযায়ী, তিন উপজেলায় ২৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন লড়ছেন। ১২৪ টি কেন্দ্রে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৩৮২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া সুষ্ঠভাবে ভোট গ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারের পাশাপাশি আনসার ও পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। তিনটি উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ জন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ২৯ জন, বিজিবি, র্যাব, ও ডিবির সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।