আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ, কেশবপুর
শুক্রবার গভীর রাতে ঝড়ে উঠতি ভূট্টার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেতের ভূট্টা গাছ ঝড়ে হেলে পড়েছে। এতে কৃষকরা ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাবে গত কয়েক বছর ধরে মশুরি, গম ও খেসারীর ফলন বিপর্যয় ঘটছে। যে কারণে কৃষকরা এসব ফসল আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ঝুঁকে পড়েন ভূট্টা আবাদের দিকে। বৈশ্বিক প্রভাবে বর্তমান ভূট্টার বাজার মূল্য অনেক বেশী। এছাড়া, ভূট্টা খামারের গরু ও পোল্ট্রির প্রধান খাদ্য। এসব বিবেচনা করে কৃষকরা ভূট্টার আবাদ করেন। চলতি বছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কিছু কিছু কৃষক ব্যক্তি উদ্যোগে ও উপজেলা কৃষি বিভাগের প্লট প্রদর্শনীর মাধ্যমে ভূট্টার আবাদ হয়। এরমধ্যে উপজেলার মজিদপুর, হাসানপুর, সাগরদাঁড়ি ও ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে ভূট্টার আবাদ হয়েছে বেশী। কৃষকদের নীবিড় পরিচর্যায় প্রতিটি গাছে সবেমাত্র ভূট্টার মোচা বের হচ্ছে। অনেক কৃষক ভূট্টা চুরি রোধে ক্ষেতের পাশে টোঙঘর বেঁধে রাত জেগে পাহারার ব্যবস্থা করেছেন। আর কিছুদিন পরেই কৃষকদের কাঙ্খিত ফসল ঘরে উঠবে। কৃষক যখন এমন স্বপ্নে বিভোর তখনই গত ১৭ মার্চ গভীর রাতে ঝড়ে ভূট্টা গাছ হেলে পড়ে। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় কৃষকের মাথায় হাত উঠেছে।
উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের কৃষক নিজামউদ্দীন সরদার বলেন, গেল বছরের সেপ্টেম্বরে নিজ উদ্যোগে তিনি এক বিঘা জমিতে ভূট্টার আবাদ করেন। এপর্যন্ত তার প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। সকল পরিচর্যা শেষে যখন ফসল ঘরে উঠবে ঠিক এমন সময় ঝড়ে তার ক্ষেতের অর্ধেক ভূট্টা গাছ হেলে পড়েছে। হেলে পড়া ভূট্টা গাছে দানা পুষ্ট হয় না। এতে ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন, ভূট্টা একটি লাভজনক ফসল। চলতি বছর এ উপজেলায় ৯৫ হেক্টর জমিতে ভূট্টার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কৃষকরা ভালো ফলনের আশা করছিলেন। ঝড়-বৃষ্টিতে কিছু কিছু খেতের ভূট্টা গাছ হেলে পড়েছে। এতে শতকরা ৫ ভাগ ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে অনেক দিনপর স্বস্তির বৃষ্টি হওয়ায় অন্যান্য ফসলের জন্যে আশির্বাদ হয়ে দেখা দিয়েছে।