কেশবপুর পৌর প্রতিনিধি
কেশবপুরে এক গৃহবধূর ৭ মাসের সন্তান গর্ভপাত ঘটিয়ে পরদিন সকালে জোরপূর্বক তালাকনামায় স্বাক্ষর নিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০ মার্চ উপজেলার গড়ভাংগা গ্রামে। দুই সন্তানের জননী রেক্সনা বেগম (৩০) এ প্রতিনিধিকে জানান, আমার স্বামী ও ফার্মেসি মালিক মণি পরিকল্পিতভাবে ওষুধের মাধ্যমে আমার সন্তানকে হত্যা করে, তারা আমার ওপর দোষ চাপিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে কথিত ফার্মেসি মালিক মণি দোকান বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার গড়ভাংগা গ্রামের আজিজুর রহমান গাজী গত ১৯ মার্চ বিকেলে তার ৭ মাসের অন্তঃস্বত্তা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে গড়ভাংগা বাজারে আসতে বলে। স্বামীর কথামত গড়ভাংগা বাজারে আসলে তাকে ওই বাজারের মুক্তা ফার্মেসিতে যেয়ে কথিত মণি ডাক্তারের কাছ থেকে ওষুধ নিতে বলে। এ সময় দু’সন্তানের জননী রেক্সনা বেগম ওই ফার্মেসিতে গেলে ডাক্তার তাকে ওষুধ দেন। রাতে ওই ওষুধ সেবনের কিছু সময়ের মধ্যে রেক্সনার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় এবং একপর্যায়ে তার গর্ভপাত ঘটে। এ সময় তার একটি মৃত ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। পরবর্তিতে মৃত সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার জেরে ওই গৃহবধূর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে ২০ মার্চ রেক্সনার পিতা-মাতাকে খবর দিয়ে এনে তাদেরকে আটকে রেখে জোর করে তালাক নামায় স্বাক্ষর করে নিয়ে সন্তানসহ তাদেরকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এ সময় তার বড় ছেলেকে তার স্বামী ও শ্বাশুড়ী জোর করে কেড়ে নেয়।
এদিকে গড়ভাংগা বাজারের হাতুড়ে ডাক্তার মণি তার মুক্তা ফার্মেসিতে ডাক্তারের ব্যবস্থা পত্র ছাড়াই একই সাথে, ছাগল, গরু, হাঁস, মুরগিসহ মানুষের ওষুধ বিক্রি করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ মাত্র ৩০০ টাকার জন্য ডাক্তার মণি এক মায়ের সন্তানকে হত্যার কারণে একটি সংসার ভেঙ্গেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক তার শাস্তি দাবি করেন তারা।
কথিত ডাক্তার মণি বলেন, আজিজুরের স্ত্রী রেক্সনা আমার দোকানে ওষুধ নিতে এসেছিলো। কিন্তু আমি তার কাছে কোন ওষুধ বিক্রি করিনি।
উপজেলা ড্রাগ সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, মুক্তা ফার্মেসির মালিক মণির ড্রাগ লাইসেন্স আছে, কিন্তু বাচ্চা নস্ট করা ওষুধ রাখার অনুমতি নেই, তেমনিই ছাগল, গরু, হাঁস, মুরগী ও মানুষের ওষুধ এক জায়গায় রেখে বিক্রি করারও অনুমতি নেই।