কেশবপুর প্রতিনিধি
কেশবপুরে হোসেন ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা ‘অবহেলায়’ মুন্নি খাতুন (২৩) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে নবজাতক কন্যা সন্তান সুস্থ আছে বলে তাদের পারিবারিক সূত্র জানায়।
ক্লিনিক ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বুধবার বেলা ১২ টার দিকে কেশবপুর উপজেলার বসুন্তিয়া গ্রামের মুন্নি খাতুনের প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে তাকে কেশবপুর হোসেন ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এরপর ওই ক্লিনিকের ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী তার বিভিন্ন পরিক্ষা নিরিক্ষা শেষে, দুপুর ১ টা ৫০ মিনিটের দিকে গৃহবধূ মুন্নি খাতুনকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর কেশবপুর হাসপাতালের ডাক্তার রোকাইয়া সুলতানা লাকী ও অজ্ঞান ডাক্তার জহির উদ্দীন, দুপুর ২টার দিকে তার সিজারিয়ান অপারেশন করেন। এ সময় মুন্নি খাতুন একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। পরবর্তিতে বিকেল ৪ টা ৭ মিনিটের দিকে ডাক্তার জহির উদ্দীন, আবু জাফরকে মোবাইলের মাধ্যমে ফোন করে জানান রোগীর অবস্থা ভাল না খিচুনি শুরু হয়েছে। তাকে এখনই যশোর সদর হাসপাতালে নিতে হবে। এরই মধ্যে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত করে রাখেন। পরবর্তিতে মুন্নিকে যশোর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করার পর রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে তার মৃত্যু হয়।
মুন্নি খাতুনের স্বামী আবু জাফর বলেন, হোসেন ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষে এবং ডাক্তাদের গাফিলতির কারণে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সদ্য ভূমিষ্ঠসহ আমার ২টা মেয়ে এতিম হয়েছে। এ রকম যেন আর কোন সন্তান মা হারা না হয়। এদের বিচার হওয়া উচীত।
ডাক্তার অজ্ঞান করা ডাক্তার জহির উদ্দীন বলেন, আমি এবং আমার স্ত্রী রোকাইয়া হোসেন পলি, কেশবপুর হাসপাতালে কর্মরত আছি। আমিসহ আমার স্ত্রী দু’জনে মিলে দুপুর আড়াই টার দিকে গৃহবধূ মুন্নি খাতুনের সিজারিয়ান অপারেশন করি। এরপর ২০ মিনিট পর তার পেসার বেড়ে গিয়ে খিচুনী শুরু হলে তাকে বিকেলে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ডাক্তার রোকাইয়া হোসেন পলি বলেন, আমি এবং আমার স্বামী ডাক্তার জহির উদ্দীন বুধবার দুপুর ২টার দিকে ওই রোগীর সিজারিয়ান অপারেশন করি। পরে দুপুর আড়াই টার দিকে রোগীর উচ্চরক্তচাপের ফলে খিচুনী শুরু হলে তাকে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ওখানে তার মৃত্যু হয়। কেশবপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তা ডাক্তার আলমগীর হোসেন কিছুটা এড়িয়ে গিয়ে বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং শুনেছি। যারা সিজারিয়ান অপারেশন করেছেন তারা প্রটোকল মেনেই করেছেন।
ক্লিনিক মালিক হামিদুজ্জামান বলেন সিজারের পর রোগীর হার্ট অ্যাটার্ক হয়েছিল যশোর রেফার করার পর সেখানে মারা গেছে।
আরও পড়ুন: কেশবপুরে হোসেন ক্লিনিকে ‘অবহেলায়’ প্রসূতির মৃত্যু