ঢাকা অফিস
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এমন কোনো চাপ নেই যেটা শেখ হাসিনাকে টলাতে পারে— এটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ, আমার একমাত্র শক্তি জনগণ। আমার মাথায় বাবার হাত আছে। কে কী চাপ দিল- এতে আমাদের কিছু যায় আসে না। জনগণের স্বার্থে যেটা করার সেটাই করব।
সোমবার বিকেলে সাড়ে চারটায় গণভবনে কাতার সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলন প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সফর নিয়ে লিখিত বক্তব্যে বিভিন্ন বৈঠকের বিষয়ে সংক্ষিপ্তভাবে মূল কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ রকম বহু চাপ ছিল। পদ্মা সেতুর আগে তো কম চাপ দেওয়া হয়নি। কোনো একটা দেশের রাষ্ট্রদূত থেকে শুরু করে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে টেলিফোনের পর টেলিফোন! কেন? একজন ভদ্রলোক, তাকে একটি ব্যাংকের এমডি পদে রাখতে হবে। এমডি পদে কী মধু তা তো আমি জানি না। আইন আছে। ৭০ বছর বয়স হয়ে গেছে, তারপরও এমডি পদে থাকতে হবে। একটাই সুবিধা, এমডি পদে থাকলে মানিলন্ডারিং করা যায়। পয়সা বানানো যায়, পয়সা মারা যায়, গরিবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়। সেই চাপ কিন্তু শেখ হাসিনা সহ্য করে চলে আসছে। তারপর পদ্মা সেতু বানিয়ে দেখালাম। ওই চাপে আমাদের কিছু আসে যায় না।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এলডিসি-৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল থানি ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে এলডিসি সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৪ মার্চ কাতার সফরে যান। গত ৮ মার্চ দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে ৪০ বিশ্বনেতার দেওয়া খোলাচিঠি নিয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘দেশে কতগুলো আইন আছে। সে অনুযায়ী সব চলে। কেউ আইন ভঙ্গ করলে শ্রম আদালত সেটা দেখেন। এ ক্ষেত্রে সরকারপ্রধান হিসেবে আমার তো কিছু করার নেই। কাজেই এখানে আমাকেই বা কেন বলা হলো? তাও বিদেশি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে কেন?’
সংলাপ কার সঙ্গে করবো : নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করাই যাদের কাজ তাদের সঙ্গে সংলাপ করার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেছেন, সংলাপ কার সঙ্গে করবো? ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমি সংলাপ করেছি, তার রেজাল্টটা কী? নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করা ছাড়া কিছুই করেনি তারা।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা (বিএনপি) ৩০০ সিটে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে টাকা খেয়ে নিজেরাই নিজেদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে তারপর নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এদের সঙ্গে কীসের কথা বলবো, কীসের বৈঠক করবো।
শেখ হাসিনা বলেন, তারপরও অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় পরিবারের আকুতিতে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে বাসায় থাকার এবং চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছি। এটুকু যে করেছি সেটাই যথেষ্ট। এটুকু সহানুভূতি যে পাচ্ছে সেটা আমার কারণে। ওদের সঙ্গে আবার কীসের বৈঠক আর কীসের কী।