নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে এক দোকান কর্মচারীদের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিলে মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়। ক্রেতারা ওই পোস্টের কমেন্টে নানান রকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে শহরের এইচএমএম রোডের ডোরেমন বেবি শপের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে। ক্রেতাদের অভিযোগ ওই দোকানের প্রতিটি পণ্যের দাম দিগুণ এবং কর্মচারীরা ক্রেতাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন।
গত রোববার সদরের রামনগরের কাজীপুর গ্রামের এজেডএম জনি নামে এক ক্রেতা শহরের ডোরেমন বেবি শপে শিশুদের সাথে নিয়ে কেনাকাটা করতে যান। পরে কর্মচারীদের সাথে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে তরিকুল ইসলামসহ কর্মচারীরা তার সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং তাকে ধাক্কা দিয়ে দোকান থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন। এবিষয়ে তার সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলে তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। তিনি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘সতর্কতা : বিষয় : যশোর ডোরেমন বেবী ড্রেস সপ, এইচএমএম রোড, কাপুড়িয়াপট্টি। তাদের ব্যবহার এতটা অসামাজিক যে আজ আমার দুই বাচ্চার ড্রেস পছন্দ হওয়া সত্ত্বেও না কিনে চলে আসতে হলো। জীবনে প্রথম তাদের দোকানে গিয়েছি। আর প্রথমই এরকম এক বাজে অভিজ্ঞতা হল। ১ম কথা দুই বাচ্চার (৮ বছর ও ৬ বছর বয়স) মোট ১০ টা সেট তারা দেখিয়েছে এটা অনেক বেশি দেখিয়ে ফেলছে। ২য় কথা পছন্দ করে বাচ্চাদের তারা যে সাইজ দিয়েছে সেটা ট্রায়াল দেওয়া যাবে না। তাতে তাদের ড্রেস নাকি ময়লা হয়ে যাবে। অতপর আমি ট্রায়াল ছাড়া ড্রেস নিবোনা বলাতেই বিধিবাম। ১০ টা ড্রেস দেখছি এখন নিয়ে যেতেই হবে। এমনকি চলে আসতে চাইলে পেছন থেকে আরেকজন জামা টেনে ধরছে, ধস্তাধস্তি করছে ড্রেস নেওয়ার জন্য। এবার তারা বলে ঠিক আছে বাচ্চাকে পরান তবে নিয়ে যেতে হবে। আমি বলছি আপনারা ফ্রি দিলেও আর নেব না আপনাদের থেকে। আপনারা এখনই যদি এমন আচরণ করেন, তবে বাসায় যাওয়ার পর কোন সমস্যা হলে আবার আসলে তাহলে কি করবেন। তখন আবার আরেকজন বিভিন্ন গালি দিতে থাকে। অন্য একজন হাত টানাটানির জন্য নখের আচড়ে হাত ছুলে যায় আমার। একরকম যুদ্ধ করে তাদের দোকান থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে। এখন যারা ডোরেমনে ড্রেস কিনতে যাবেন একটু আদব শিখে যাবেন। না হলে তারা আবার আপনাকে বেয়াদব বলে সকলে মিলে আদব শেখাবে। আমার আর কিছু বলার নাই। সিদ্ধান্ত যার যার ব্যক্তিগত।’
তিনি এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ওই দোকানে গিয়ে আর কোন ক্রেতা হেনন্থার স্বীকার না হয় সে বিষয়ে প্রশাসন যাতে নজর দেয় ও তাদের বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি কামনা করেন তিনি।
এদিকে সোস্যালমিডিয়া ফেসবুকে ওই পোস্টটি ভাইরাল হলে শতশত মানুষ তা শেয়ার নেন ও কমেন্টে বিরূপ মন্তব্য করেন, ওমর ফারুক নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী ওই পোস্টের কমেন্টে লেখেন ‘এরা দোকানি নামে কসাই। এরা কাস্টমারদেরকে খয়রাতি মনে করে, গিনিপিগ মনে করে। বেশির ভাগই বাজে ব্যবহারের অভিযোগ করে।’
তুহিন মাহমুদ নামে আর একজন লেখেন ‘আমি একবার গেছি, খুবই বেয়াদব এরা।’ তহিদুর রহমান নামে একজন লেখেন ‘এই ডোরেমন আমি আরো সাড়ে তিন বছর আগে বয়কট করেছি, খুবই বাজে এরা।’ স্বপন নামে আর একজন লেখেন, ‘আমি একবার গিয়েছিলাম মেয়ের ড্রেস কিনতে, সেলসম্যানদের আচরণ ফুটপাতে বসা দোকানিদের মতো।’
এবিষয়ে ওই দোকানের ম্যানেজার হাসমত আলী জানান, ওই ক্রেতার সাথে আমরা খারাপ ব্যবহার করিনি, তিনি ৪০ মিনিট মাল দেখে শেষে না নিয়ে চলে যাওয়ার সময় তরিকুল ইসলাম নামে আমাদের একজন কর্মচারী তার হাত টান দেয়। এতে তার হাতে আঁচড় লাগে। এরপর তিনি দোকান থেকে বের হয়ে যায়।
প্রতিষ্ঠানটির মালিক নাজমুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তিনি আধা ঘণ্টা; ৪৫ মিনিট যাবৎ পোশাক পছন্দ করে পোশাকটি বাচ্চাদের পরাতে চাই। আমাদের ট্রাইল রুম না থাকার কারণে পোশাক ট্রাইল দিতে আপত্তি জানায়। এতেই তিনি রেগে গিয়ে চলে যেতে চাইলে আমাদের একজন কর্মচারী হাত ধরে অনুরোধ করেন। এর বাইরে আর কোন ঘটনা ঘটেনি। সিসি ক্যামেরায় ভিডিও ফুটেজ আছে তাতে স্পষ্ট যে তার সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করা হয়নি।
জেলা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিবের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।