মাঝারি তাপপ্রবাহে নাকাল প্রাণিকূল
বৃষ্টির সম্ভাবনা আজ
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: যশোরে তীব্র তাপপ্রবাহে হাফিয়ে উঠেছে প্রাণিকূল। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ আর রোজাদাররা কাহিল হয়ে পড়েছেন। শুক্রবার যশোরে এই মৌসুমের সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। আর শনিবার ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ রোববার জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির দেখা পেলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।
যশোর আবহাওয়া অফিস মতে, শনিবার যশোরে থার্মমিটারের পারদে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল। এর আগে শুক্রবার ৩৮ ও বৃহস্পতিবার ছিল ৩৫ ডিগ্রি। যা দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। রাজশাহিতে ছিল শুক্রবার ৪১ ডিগ্রি।
যশোর অঞ্চলে দীর্ঘদিন দেখা নেই বৃষ্টির। খরতাপে মাঠঘাট শুকিয়ে গেছে। নেমে গেছে পানির স্তর। মাত্রাতিরিক্ত গরমের কারণে নাকাল প্রাণিকূল। তীব্র গরমে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের। রোজাদারদের অবস্থা কাহিল। এ অবস্থায় তাদের পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে। ইতিমধ্যে যশোর আড়াইশ শয্যা হাসপাতালে শতাধিক রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে।
গতকাল খাঁ খাঁ রোদে পুড়েছে গোটা যশোর অঞ্চল। সকাল থেকেই সূর্যের বিচ্ছুরণে মধ্যবেলায় প্রকৃতি নেয় অগ্নিরূপ। কাঠফাটা রোদে চিল-চাতকের মতো হাঁসফাঁসে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে মানুষের জীবন।
বৈশাখের শুরুতে যশোরের উপর দিয়ে বইছে টানা তাপ প্রবাহ। ইতিমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে যশোরে। গত দুই যুগ আগে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠেছিল যশোরে। এর আগে ১৯৯৫ সালে এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠেছিল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
থার্মোমিটারের পারদ যদি ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে, আবহাওয়াবিদরা তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলেন। উষ্ণতা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করে আবহাওয়া অফিস।
তীব্র খরতাপে যশোরে ভূ-স্তরের পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অস্বাভাবিক নীচে নেমে গেছে পানির স্তর। ইতোমধ্যে অনেক টিউবওয়েলে পানি উঠা বন্ধ হয়ে গেছে। আর যেসব টিউবওয়েলে পানি উঠছে তার পরিমাণ খুবই কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরিকল্পিতভাবে স্যালো দিয়ে পানি তোলা এবং যত্রতত্রভাবে পুকুর-খালবিল ভরাট হবার কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। সামনে বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
যশোর বিএডিসির (সেচ) সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানা জানান, জানুয়ারি থেকে পানির স্তর নামতে শুরু করে। এপ্রিল মাসে পানির স্তর সর্বোচ্চ নিচে নেমে যায়। তবে এবার একটু আগেভাগেই মার্চ মাস থেকেই ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমেছে। সাধারণত বছরে গড় বৃষ্টিপাত হয় ২০৩ সেন্টিমিটার। তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানির স্তর নামছে। বর্তমানে পানির স্তর ৩৬ ফুট ৯ ইঞ্চি নীচে নেমে গেছে। একারণে টিউবওয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে।