নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ শহরের টাউন হল ময়দানে সমাবেশ করবে যশোর জেলা বিএনপি। দীর্ঘ ১ বছর ২ মাস পর যশোরে বড় কোন সমাবেশের আয়োজন করতে যাচ্ছে দলটি। এর আগে গত বছরের মে মাসে সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে যশোরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছিলো জেলা বিএনপি। তারপর আর যশোরে দলটির বড় কোন সমাবেশ দেখা যায়নি। তবে কখনো কখনো লালদীঘি পাড়ে দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে ছোটখাটো সমাবেশ বা দোয়া মাহফিল হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে আবারও সক্রিয়ভাবে ঘুরে দাঁড়াবে যশোর জেলা বিএনপি।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েস্বর চন্দ্র রায়। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীরা নবরুপে নবউদ্যামে জেগে উঠেছেন এমনটি বলছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পাড়া মহল্লায় সর্বত্র দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। জেলা বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে জেলা, উপজেলা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে এমনটি জানা যায়।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, দলীয় প্রধানকে মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমাদের এই সমাবেশ। সরকার তাকে বছরের পর বছর অন্যায়ভাবে সর্ম্পূণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বন্দি করে রেখেছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ, সরকার তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। আজ দেশের সংকটকালে জনগণ বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। সেই প্রয়োজনীয়তার অনুভব থেকে ইতঃপূর্বে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মহানগরীতে অনুষ্ঠিত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের সমাবেশে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশপাশি সাধারণ মানুষের ঢল নামে। যশোরের এই সমাবেশেও ঠিক একই অবস্থার রূপ নেবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সমগ্র যশোর শহর সমাবেশে রূপ নেবে। যেটি হবে যশোরের নিকট অতীতের এমনকি স্মরণকালে কোনো রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ সমাবেশ।
দীর্ঘ ১ বছর পরে বিএনপির এমন সমাবেশ কতটা সফল হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যশোরে বিএনপি সবসময় সক্রিয় ছিলো। আমরা ধারাবাহিকভাবে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সময় মিছিল, মিটিং করেছি। আর এবার যেহেতু দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ ডাকা হয়েছে সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সমাবেশটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সফল করবেন। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছুটা জটিলতা হতে পারে বলেও তিনি শংকা প্রকাশ করেন।
বিএনপি বড় ধরণের সমাবেশের ডাক দিলেই নেতাকর্মীরা পুলিশের ধরপাকড়ের শিকার হন, এমনটা জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সব সময় বলা হয়েছে তবে এবার সমাবেশের আগে তেমন কোন ঘটনা ঘটেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপশি মৌখিকভাবে সমাবেশের অনুমতিও দিয়েছে প্রশাসন। ফলে কোন রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া জেলা বিএনপির সমাবেশ সফল হবে মনে করছেন বিএনপির এই নেতা।
কেশবপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস বলেন, সমাবেশের জন্য আমরা কেশবপুরবাসী পুরোপুরি প্রস্তুত। বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের সমাবেশকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লায় সর্বত্র দলীয় নেতাকর্মীরা নবউদ্যোমে জেগে উঠেছে।
শার্শা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুজ্জামান মধু বলেন, যেহেতু এটি দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের সমাবেশ, সেহেতু এটি হবে সর্বোচ্চ সমাবেশ। এখানে দলীয় নেতাকর্মীর কোনো কার্পণ্য ছাড়াই সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারের মাধ্যমে সমাবেশকে সফল ও সার্থক করবেন।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল বলেন, সমাবেশ সফলে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল তার ১৬টি ইউনিটের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রস্তুতিসভা করেছে। সমাবেশ সফলে দলীয় নেতাকর্মীরা যার যার অবস্থান থেকে সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন। রোদ, ঝড়, বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল তার সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সমাবেশে যোগ দেবে।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আর গণতন্ত্র একই সূত্রে গাঁথা। গণতন্ত্রের নেত্রীকে সরকার মিথ্যা মামলার রায়ের মাধ্যমে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। সেই গণতন্ত্রের নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনের জেলা ছাত্রদল সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।