নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনা বিভাগের সকল বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাকবাজেট মতবিনিময় সভা বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তৃতায় বলেন, দেশের জিডিপির আকার বিবেচনায় রাজস্ব আদায় অনেক কম। অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে রাজস্ব আদায়ের গুরুত্ব অনেক। আয়করের চেয়ে পরোক্ষ কর ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ বেশি হওয়া অনুচিত, কারণ ধনী-দরিদ্র সবার উপর এটি প্রযোজ্য। অনেক সময় ভোক্তার কাছ থেকে ভ্যাট আদায় করার পরেও ব্যবসায়ীরা ভ্যাটের টাকা রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা দেন না। তিনি বলেন, আমাদের সকলকে আইন মানার সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হতে হবে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর হতে সেবা পেতে নাগরিকদের আয়কর দেয়ার প্রমাণক জমা দিতে হয়। সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোকেও সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সেবাপ্রত্যাশী ব্যক্তির আয়কর প্রদানের নথিপত্র যাচাই করে সেবা প্রদান করা প্রয়োজন। প্রতিটি সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগে রাষ্ট্র উপকৃত হবে কিনা সেটি ভাবতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য সহনীয় করতে বিগত দুই তিন মাসে আট-দশটা আইটেমে কর ছাড় দেয়া হয়েছে। চাল, ভোজ্যতেল, চিনি, খেজুরের উপর শুল্ক অনেক কমানো হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে জনগণের প্রয়োজনকে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ সরকারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহাংগীর হোসেন, বাংলাদেশ পুলিশের খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি বেলায়েত হোসেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, সদস্য (মূসক নীতি) ড. আবদুর রউফ, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক তানভিরুল ইসলাম সোহান, যুগ্ম সম্পাদক এজাজ উদ্দিন টিপু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এসময় যশোর চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে যশোরের অর্থনৈতিক গতি ফেরাতে লিখিত সুপারিশ পেশ করা হয়।
লিখিত সুপারিশের মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ভ্যাট হার না বাড়িয়ে নতুন ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্ত করে ভ্যাট আদায়ের পরিধি বাড়ানো হোক, যাতে করের বোঝা না বাড়িয়ে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা যায়। নতুন শিল্প গড়ে তোলার জন্য উদ্যোক্তাদের প্রথম ৩ থেকে ৫ বছর ভ্যাট অব্যাহতি প্রদান করা হোক, এতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে অর্জিত রাজস্বের একটি অংশ বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে।
আমদানি-রপ্তানিকৃত পণ্যের গুণগত মান পরীক্ষার জন্য বেনাপোল বন্দর এলাকায় একটি আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হোক। যাতে ব্যবসায়ীদের সময়, খরচ ও ভোগান্তি কমে। আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে ও ব্যবসা বাণিজ্যের গতি বৃদ্ধির জন্য বেনাপোল থেকে ভাঙ্গা মহাসড়ককে ছয় লেনে উন্নীত করার জন্য বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
নৌপথ সচল রাখতে ভৈরব নদীর ড্রেজিং ও পলি অপসারণের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া উল্লেখযোগ্য।