যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তার পক্ষেই কাজ করার নির্দেশ তারেক রহমানের
নিজস্ব প্রতিবেদক
আগামী সংসদ নির্বাচনে খুলনা বিভাগের ৩৫টি আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে সোমবার ২৭ অক্টোবর বৈঠক করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিভাগের প্রায় শতাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী ওই সভায় অংশ নেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান মনোনয়ন প্রত্যাশীদের পূর্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তার পক্ষেই কাজ করতে হবে। এর কোন ব্যত্যয় করলে গ্রহণযোগ্য হবে না।
বৈঠকে অংশ নেওয়া বিএনপির একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী বলেন, দল যাকেই মনোনয়ন দিক, তার পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান। সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। কোনো বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর কেউ সহযোগিতা না করলে তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়। তারেক রহমান বক্তব্যে আরো বলেছেন, নির্বাচন ও দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপিকে সতর্ক থাকতে হবে। থাকতে হবে ঐক্যবদ্ধ। কোন বিভেদ চলবে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত থেকে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার নেতাদের ফোন করে আমন্ত্রণ জানানো শুরু হয়। তবে চমক ছিল খুলনার আলোচিত ও প্রভাবশালী নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুর আমন্ত্রণ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে মতবিনিময়ে মঞ্জুর উপস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সরব হয়ে উঠেন তার অনুসারীরা। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কেন্দ্র থেকে করা আহ্বায়ক কমিটিতে তাকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদও হারান। বাদ দেয়া হয় কেন্দ্রীয় কমিটি থেকেও। এরপরও দমে না গিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সব সময় সরব থেকেছেন। প্রতিটি কর্মসূচি নিজের অনুসারীদের নিয়ে পালন করেছেন।
এদিকে প্রার্থী চূড়ান্ত করার প্রসঙ্গে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে বলেন, ‘এই মাসের মধ্যেই দলের পক্ষ থেকে দুই শতাধিক আসনে একক প্রার্থীকে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়া হবে। সেই প্রক্রিয়ার একদম শেষ পর্যায়ে রয়েছে দল। এরই অংশ হিসেবে প্রতিটি বিভাগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে মিটিং করে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। শিগগিরই সবাইকে জানানো হবে যেন যে যার এলাকায় নির্বাচনী আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেন।’
এদিকে, যশোর-৩ আসনে একক প্রার্থী হিসেবে গতকালের মিটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। যশোর-২ আসন থেকে মিটিংয়ে অংশ নেন জেলা বিএনপির নেতা ও চেম্বারের সভাপতি মিজানুর রহমান খান, মোহাম্মদ ইসহাক, ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সাবিরা নাজমুল মুন্নি ও চৌগাছা বিএনপির নেতা জহুরুল ইসলাম। যশোর-১ আসন থেকে অংশ নেন বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, শার্শা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু, বর্তমান সভাপতি আবুল হাসান জহির ও সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন। যশোর-৪ আসন থেকে টিএস আইয়ুব, মতিয়ার রহমান ফারাজি, নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ডাক পেয়ে অংশ নেন। এ আসনে গ্রুপিং বেশি থাকায় বাঘারপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুল হাই মনা, বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের সিদ্দিকী, বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মসিয়ুর রহমান এবং অভয়নগর উপজেলা বিএনপি নেতা মশিয়ার রহমান মশিকে সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়।
যশোর-৫ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শহীদ ইকবাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ইফতেখার সেলিম অগ্নি অংশ নেন, মুনির আহমেদ সিদ্দিক বাচ্চু। যশোর-৬ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আবুল হোসেন আজাদ, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও অমেলেন্দু দাস অপু গতকালের সভায় অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
