আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ, কেশবপুর
রাতের কুয়াচ্ছন্ন আকাশ আর শেষ রাতে শীতের আভাস জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে শীত আসন্ন। ‘যশোরের যশ খেজুরের রস’ এই প্রবাদটি চিরায়ত বাংলার প্রতিটি মানুষের মুখে-মুখে ধ্বনিত হয় শীতের আগমনী বার্তায়, আর এই বার্তায় কেশবপুরে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে গাছের শাখা প্রশাখা ও আগাছা কেটে সাফ করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন গাছিরা।
খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথা ভালো করে পরিষ্কার করে সাদা অংশ কেটে রোদে শুকিয়ে আবারও কেটে নলি লাগিয়ে ছোট-বড় বাসন বেঁধে রস সংগ্রহ করা হয়।
কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জমির আইল, রাস্তার পাশ এমনকি পুকুর পাড়ে খেজুর গাছের ডাল কেটে পরিষ্কার করছেন গাছিরা (এ পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তি)। কোমরে রশি বেঁধে নিপুন হাতে গাছ ছেঁটে দিচ্ছেন।
গাছিরা জানান, শুকানোর পর আবারও ছেঁটে দিবেন। এরপর ১০ থেকে ১৫ দিন পরে নলি লাগাবেন। এরপর শুরু করবেন রস সংগ্রহ। এ রস অনেকে হাট-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন। আবার কেউ জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করেন।
কেশবপুরের খেজুরের রসের খ্যাতি বাংলাদেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। কেশবপুর, মণিরামপুর তাজা খেজুরের রসের তৈরী গুড় বাংলাদেশের প্রত্যেক অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। পাশাপাশি আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারত, মায়ানমারসহ পৃথিবীর কয়েকটি দেশে কেশবপুরের খেজুরের গুড়ের ব্যাপক কদর রয়েছে। যশোর তথা কেশবপুরকে সারা পৃথিবীতে পরিচিত করেছে যে কয়টি বিষয় তার মধ্যে যশোরের কেশবপুরের খেজুরের রস ও গুড় অন্যতম।
এদিকে ইট ভাটা ও টালী কারখানায় জ্বালানি হিসাবে অবাধে খেঁজুর গাছ ব্যবহার করার ফলে এ উপজেলায় খেজুর গাছের সংকট সৃষ্টি হয়েছে এমন অভিযোগ গাছিদের।