আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
নিজস্ব প্রতিবেদক: সব দুশ্চিন্তা শেষ করে ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালীর চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। বিশ্ব ভালোবাসা ও বসন্তবরণ দিবসে ফুলের দাম ভালো পাবার পর এবার ২১ ফেরুয়ারিতে প্রায় সব ফুল বিক্রি করতে পেরেছেন তারা। যে কারণে করোনার কারণে তাদের মধ্যে যে হতাশা ছিল সেটি কেটে গেছে। গত ১৯ ও ২০ ফেরুয়ারি গদখালির চাষিরা বিক্রি করেছেন প্রায় ৩ কোটি টাকার ফুল।
ফুল চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত দুই দিন আগে গদখালির চাষিরা মানভেদে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি করেছেন ১২ থেকে ১৩ টাকা পিস, জারবেরা বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ৮ থেকে ১২ টাকায়, রজনীগন্ধা ১৮শ টাকা শ, গ্লাডিউলাস বিক্রি হয়েছে ৮শ থেকে ২ হাজার টাকায়। এছাড়া গাঁদা ফুল বিক্রি করেছেন প্রতি হাজার দেড় হাজার পর্যন্ত।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির তথ্যমতে, যশোরে ফুলচাষি রয়েছে প্রায় ৬ হাজার। তারা অন্তত ১৫’শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার ফুল চাষ করেন। ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারা, নাভারণ, নির্বাসখোলার বিভিন্ন মাঠে অন্তত ১১ ধরনের ফুল উৎপাদন করেন।
এলাকায় উৎপাদিত ফুল বিক্রির জন্য গদখালীতে যশোর রোডের দুই ধারে রয়েছে দেশের বৃহত্তম ফুলের বাজার গদখালী। রোববার কাকডাকা ভোর থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে সরব হয়ে ওঠে ফুলের বাজার। গোলাপ, রজনীগন্ধা, গাঁদা, গ্লাডিওলাস, জারবেরা ফুলের পসরা সাজিয়ে দাঁড়িয়েছে রয়েছে শত শত ফুলচাষী। কেউ ভ্যান, কেউ সাইকেল বা ঝুড়ির মধ্যে ফুল রেখে ঢাকা ও স্থায়ীয় ব্যবসায়ীদের সাথে ফুলের দাম নিয়ে হাক-ডাকে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। গত দুদিন ধরে ফুলের চাহিদা বাড়তি থাকায় পাইকারি ব্যবসায়ীরা অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি ফুল কিনছে এই বাজার থেকে। একই সাথে বেশি দাম পাওযায় ফুল চাষীরাও বাজারে দ্বিগুণ ফুল এনেছে। সবমিলিয়ে উৎসবের এই মাসে আবারও ফুল-বেচাকেনায় জমে উঠায় ফুলচাষি কিংবা ব্যবসায়ীদের মনে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। তাদের আবাদের প্রায় সব ফুলই বিক্রি করতে পেরেছেন তারা।
গদখালী বাজারে ফুল নিয়ে আসা পানিসারার হাড়িয়া নিমতলা এলাকার ফুলচাষি গোলাম মোস্তফা বলেন, ভালোবাসা দিবসের পর বেচাকেনা অনেক ভালো হয়েছে। ভালোবাসা দিবস, বসন্তবরণ আর আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে আমাদের ফুল বিক্রি সন্তোষজনক হয়েছে।
গদখালীতে প্রথমবারের মতো টিউলিপ চাষ করেছেন পানিসারার ইসমাইল হোসেন। তার পাঁচশতক জমিতে ফুঠেছে বিভিন্ন রঙের সাত প্রকারের টিউলিপ ফুল। তিনি জানান, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে তার জমিতে টিউলিপ ফুটা শুরু করেছে। ভালোবাসা দিবসে কিছু টিউলিপ বিক্রি করা হয়েছে। বাকিগুলো শনিবার ও রোববার বিক্রি হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটি একাংশের সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, সরকারের বিধি নিষেধে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে ফুলের বাজার। মানুষ ফুল কিনেছে। পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসের পর ২১ ফেব্রুয়ারিতেও ফুলের ভালো বাজার গেছে। ভাষা দিবসে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে।