কল্যাণ ডেস্ক
গুলশানে বিএনপির কার্যালয়ে ডাক পড়েছে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর। এতে চার বছরের সব হিসাব নিকাশ বদলানো শুরু হয়েছে। কারণ খুলনা-২ আসনের তিন সম্ভাব্য প্রার্থীই হেভিওয়েট। এ অবস্থায় আগামীতে দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন এটাই আলোচনার বিষয়।
এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আমাকে ফোন করেছিলেন এবং এসএমএসের মাধ্যমে সোমবার বিকালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনলাইন মিটিংয়ে অংশ নিতে গুলশান কার্যালয়ে থাকতে বলেছেন। দীর্ঘদিন পর হলেও আমাকে তিনি ডেকেছেন, এটা বড় একটা পাওয়া। আমি সব সময় রাজনীতির মধ্যে ছিলাম। দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সব কার্যক্রম করেছি। এর আগে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজে আমাকে ফোন করে দলের জন্য কাজ করতে বলেছিলেন। তার নির্দেশমতে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খুলনা-২ আসনে ধানের শীষের প্রচারণা চালিয়েছি।
এদিকে ২০২১ সালের পর থেকে মাঠ ছাড়েননি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বিভিন্ন ব্যানারে তিনি রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে গেছেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালন করেছেন তার অনুসারীদের দিয়ে। খুলনায় অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সমাবেশে তিনি তার অনুসারীদের নিয়ে শোডাউনসহ মিছিলও করেছেন। ঈদ, পূজাসহ সব সামাজিক অনুষ্ঠানে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখলেও দল থেকে পাননি তেমন মূল্যায়ন।
এদিকে খুলনা-২ আসনে আগামী নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে সব থেকে বেশি প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন সাঁটিয়েছেন বর্তমান মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। তার পাশাপাশি নজরুল ইসলাম মঞ্জুও ধানের শীষের প্রচারণা চালাচ্ছিলেন।
এরপর হঠাৎ করে চলতি মাসে নগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনাও সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা শুরু করেন। মহানগরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে পৃথক কর্মসূচি পালন করা শুরু করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে কানাঘুষা শুরু হলে কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতার হস্তক্ষেপে শফিকুল আলম মনা এবং শফিকুল আলম তুহিন যৌথভাবে প্রচারণা শুরু করেন। তবে মঞ্জু ধারাবাহিকভাবেই তার অনুসারীদের নিয়ে তারেক রহমানের ৩১ দফাসহ ধানের শীষের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
তবে কেন্দ্রীয় বিএনপির একটি সূত্র জানান, সব আগ্রহী প্রার্থীদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডেকেছেন। তবে কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার উদ্দেশে নয়, আগামীতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য। বিষয়টি এমনও হতে পারে এখানে তিনজনের মধ্যে কাউকে দিবেন অথবা নতুন কোনো চমকও থাকতে পারে। এটা তারেক রহমান দেশে আসার পর সিদ্ধান্ত হবে।
সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদ বলেন, দীর্ঘদিন পর খুলনার জনপ্রিয় নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে ডেকেছেন, এটা আমাদের বড় পাওয়া। আমরা চাই, আগামীতে খুলনা-২ আসনে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হোক। পাশাপাশি তার বিভাগীয় পদটিও ফেরত দেওয়ার দাবি জানাই।
সদর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান অপু জানান, খুলনার আপামর জনসাধারণের ভালোবাসার মানুষ মঞ্জু ভাই। তাকে খুলনার সর্বস্তরের মানুষ ভালোবাসে। খুলনাবাসীর আশা আগামীতে মঞ্জু ভাই ধানের শীষের মনোনয়ন পাবেন।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি পদ হারান খুলনা-২ (সদর-সোনাডাঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু। আহ্বায়ক কমিটিতে পদ পান বর্তমান নগর বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা এবং সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন।
এ ঘটনার পর নজরুল ইসলাম মঞ্জু তার অনুসারীদের নিয়ে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। পদত্যাগ করেন তার অনুসারী শতশত নেতাকর্মী। এর পরপরই কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকেই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
