নিজস্ব প্রতিবেদক
গোল দুটো মিস করে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল। জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের আঞ্চলিক পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচের শেষ বাজি বাজতেই হতাশ যশোরের কোচ আনোয়ার পারভেজ এ মন্তব্য করেন। কোচ আনোয়ার পারভেজের মতো ঘরের মাঠে গোল শূন্য ড্র করে হতাশ দলের খেলোয়াড় কর্মকর্তা। কেননা হোম ভেন্যুর সুবিধা কাজে লাগিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ার প্রত্যাশা করেছিল। কিন্তু তা আর হয়নি। ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে যশোর-মাগুরা কোন দলই গোলমুখ খুলতে পারেনি। ম্যাচ সমতায় শেষ করে মাঠ ছাড়তে হয়। ম্যাচে সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন মাগুরার আল আমিন মিয়া। তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম।
যশোর শামস্-উল-হুদা স্টেডিয়ামের মাঠ খেলা নিয়ে যাওয়া হামিদপুরস্থ শামস্-উল হুদা ফুটবল একাডেমি মাঠে। এদিন শুরু থেকে বল দখলে লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল। প্রায় সময়ই মাগুরার দখলে ছিল মাঝ মাঠ। মাগুরার মিল্টন ও ম্যাচ সেরা আল আমিন অ্যাটাক ও ডিফেন্সের মধ্যে দারুন সমন্বয় করছিলেন। কিন্তু যশোরের মাঝ মাঠ বলে কিছুই ছিল না। দলের অধিনায়ক খোকা বাবু নিজের ছাড়া হয়ে ছিলেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধে খোকা বাবু তুলে নিলে মাঝ মাঠের আধিপত্য খুঁজে পায়। অপরদিকে আগের দিনের খ্যাপ খেলতে যাওয়ায় দলের সহ-অধিনায়ক আরঙ্গজেবকে শুরুর একাদেশ মাঠে নামাননি। তবে মাচের ২০ মিনিট পার না হতেই বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামানো হয় আরঙ্গকে।
মধ্য মাঠের ছন্দপতনের সুযোগ নিয়ে প্রথমার্ধে মাগুরা খেলোয়াড়রা বেশ কয়েকটি আক্রমণ গড়ে। তবে তা যশোরের রক্ষণ দূর্গ ভাঙতে পারেনি।
প্রথমার্ধের চার মিনিটে প্রথম আক্রমণ গড়ে মাগুরা। মিল্টন মিয়ার কর্নার কিকে মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন হোসেন আলী। ১৫ মিনিটে জিম হোসেনের নেওয়া ক্রসে দারুণ গোলের সুযোগ তৈরি করে যশোর। কিন্তু রাকিব হোসেন যে হেড নেন তা ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। এরপর আরো কয়েকটি গোলের জন্য আক্রমন গড়ে মাগুরা। কিন্তু গোল আদায় করে নেওয়ার মত কোন সুযোগ তারা তৈরি করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে দু’দলই ছিলো বল দখলের লড়াইয়ে সমানে সমান। গোল আদায়ের জন্য আক্রমনও করেছে। কিন্তু বল জালে জড়ানোর মত যে দক্ষতা দেখানো দরকার সেটিই করতে পারেনি কোন দলই। ফলে গোল শূণ্য ড্রয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে দু’দল।
প্রতিযোগিতা হোম অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সে কারণে আগামী রোববার যশোর আতিথ্য নিতে যাবে মাগুরায়। সেই ম্যাচটি তখন ডু আর ডাই হিসেবে বিবেচিত হবে দু’দলের কাছে। যারাই হারবে তাদেরকে প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়তে হবে।
প্রতিপক্ষের সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। তবে এদিনের ম্যাচে বেশ কিছু বিষয় সবাইকে হতবাক করেছে। মেডিকেল টিমে দায়িত্ব থাকাদের দ্রুত মাঠে যেয়ে খেলোয়াড়ের সেবা দেয়ার মতো ফিটনেস ছিল না। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে মাগুরার একজন খেলোয়াড় আহত হলে রেফারি মাঠে কয়েকবার স্ট্রেচার নিয়ে যাওয়ার সংকেত দিলেও মাঠে ছিলো না কোন স্ট্রেচার। খেলোয়াড়টি এতটাই আহত ছিলেন যে তাকে মাঠের বাইরে নেওয়া জরুরী হয়ে পড়ে। স্ট্রেচার না থাকায় শেষ পর্যন্ত কয়েকজন খেলোয়াড় তাকে অনেকটা চেংদোলা করে মাঠের বাইরে যান। এছাড়া আহত খেলোয়াড়কে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। সে সময়ে ছিলো না কোন ব্যবস্থা।
এছাড়া ম্যাচের শেষ পাঁচ মিনিট অতি বৃষ্টির কারণে আলোর স্বল্পতা। তার মধ্যেও খেলা চালিয়ে গেছেন রেফারি।
