নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের ৮ উপজেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। বন্ধ আছে সরকারিভাবে র্যাবিস ভ্যাক্সিন (কুকুরে কামড়ালে) প্রদান। এছাড়াও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। পর্যাপ্ত মজুত নেই কলেরা স্যালাইন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা। রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সিভিল সার্জন বলেন, সম্প্রতি জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। কিন্তু সরকারিভাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ কলেরা স্যালাইন মজুত নেই। জেলার ৮ উপজেলায় অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলো পরিচালিত হচ্ছে। ফলে চিকিৎসা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
তিনি বলেন, গরমে ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়বে সেজন্য আমাদের আগে থেকে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সরকারি হাসপাতাল গুলোতে ডেঙ্গু কীট পর্যাপ্ত সরবারহ করার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সিভিল সার্জন বলেন, গরমে ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশুদের বাইরের খাবারের ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক থাকা জরুরি। একই সাথে বাহিরে লেবুর শরবত, ফুসকা, চটপটিসহ ফাস্টফুড খাবার ব্যাপারে তিনি সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় পৌর প্রশাসক রফিকুল হাসান বলেন, পৌরবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে আরও ৪টি টাওয়ার লাইট স্থাপন করা হবে। যার মধ্যে মণিহারে সিটি কলেজ এলাকায় আরও একটি লাইটসহ শহরের নিউ মার্কেট, চাঁচড়া মোড় ও পালবাড়ি মোড়ে টাওয়ার লাইট স্থাপন করা হবে। এছাড়াও বর্ষার আগে পৌর এলাকার সকল ড্রেন পরিষ্কারের কাজ দ্রুতগতির সাথে চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হুসাইন শাফায়াত বলেন, হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ রোগীকে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি সর্বোচ্চ মানের সেবা দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পেক্ষাপটে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি ভেঙ্গে গেছে। কারণ এই কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। কমিটি না থাকায় হাসপাতাল উন্নয়নের কাজ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। তাই কমটিকে কিভাবে সক্রিয় করা যায় সেবিষয়ে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, জনদুর্ভোগ কমাতে সরকারিভাবে যেকোন কাজের আগে স্থানীয় জনসাধারণের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। তাহলে জনদুর্ভোগ কমবে, একই সাথে কাজের মানও ভালো হবে। বিশেষ করে সড়ক সংস্কার, ড্রেন পরিষ্কারসহ এলাকা ভিত্তিক উন্নয়ন কর্মকা- পরিচালনার সময় স্থানীয় নাগরিকদের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, যখন কোন এলাকা থেকে দুর্ভোগের অভিযোগ আসবে, সেই অভিযোগকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। চেষ্টা করতে হবে দ্রুত সমাধান করার। সভায় জেলা প্রশাসক চিত্রা মোড়ে অবস্থিত জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেলের বর্তমান অবকাঠামোগত অবস্থান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সামনে ঝড় আসলে জাবির হোটেলের গ্লাসগুলো ভেঙে পরতে পারে। এতে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভবনা রয়েছে। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে গুরুত্বের সাথে দেখার নির্দেশ দেন তিনি। প্রয়োজনে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ ফায়ার সার্ভিসকে সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সড়িয়ে ফেলার ব্যাপারে পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ সার্কেল) রাজিবুল ইসলাম, গণপূর্ত অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ ব্যানার্জিসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।