নিজস্ব প্রতিবেদক
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন যশোরের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদ। বুধবার বেলা ১১টায় শহরের ঈদগাহ ময়দানে তার নামাজে জানাজা শেষে কারবালা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এসময় তাকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জানাজায় তার প্রিয় শিক্ষার্থীসহ শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম, যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব, যশোর নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সভাপতি মাস্টার নূর জালাল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এসএম হুমায়ূন কবীর কবু, আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ, এসএম মাহমুদ হাসান বিপু, যুবলীগ নেতা তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু, শফিকুল ইসলাম জুয়েল, বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম চৌধুরী মুল্লুক চাঁদ, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক মাসুদুজ্জামান মিঠু প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। অধ্যক্ষ সুলতান আহমেদের জন্ম ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামে। মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে তিনি পড়ালেখার জন্যে যশোর চলে আসেন এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। পরবর্তীতে খড়কির মেয়ে জাহানারা বেগমের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি ১৯৭০ সালে যশোর ইনস্টিটিউট স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৫ সালে স্বেচ্ছায় এখান থেকে অবসর নিয়ে ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠাকালীন অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন ডাক্তার আব্দুর রাজ্জাক কলেজে। এই কলেজ থেকে ২০১৩ সালে অব্যাহতি নিয়ে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন যশোর কালেক্টরেট স্কুলে। যশোর ইনস্টিটিউট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনকালে তিনি প্রাথমিক শিক্ষার কারিকুলাম ও জাতীয় পলিসি মেকিংয়ে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সাথে কাজ করেন। তিনি ১৯৭৬ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি সন্দীপন নামক সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোরের সভাপতি হিসেবে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি রাইটস যশোরের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য এবং শিশু নিলয় ফাউন্ডেশনের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন যশোর নাগরিক সমাজের সভাপতি, যশোর মেডিসিন ব্যাংকের সহ-সভাপতি এবং যশোর সার্কিট হাউজপাড়া শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি। তার স্ত্রী জাহানারা বেগম অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ছেলে একটি স্বনামধন্য কোম্পানির উচ্চপদে অধিষ্ঠিত এবং মেয়ে ও জামাতা পিটিআই যশোরের ইন্সট্রাক্টর।