নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ইবনেসিনা হাসপাতালের চিকিৎসকের অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী দায়িত্বরত চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেছে। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে ভুক্তভোগী পরিবার বাকবিতাণ্ডতায় জড়িয়ে পড়লে গোলযোগের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় নবজাতকের মা তোবা বেগমও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে।
ওই নবজাতকের পিতা যশোর শহরতলীর ঝুমঝুমপুর বটতলা এলাকার বাসিন্দা হাসান ইমাম অভিযোগ করে বলেন, তার প্রসূতি স্ত্রী তোবা গত তিনমাস যাবৎ যশোর ইবনেসিনা হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডা. আয়েশা সিদ্দিকীর কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। তার নির্দেশনা অনুযায়ী ওই হাসপাতাল থেকে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়। তবে হাসপাতালের সনোলজিস্ট ডা. ওয়ারা বেগম বারবার আলট্রাসনোগ্রাফী করার পরও ভুল রিপোর্ট তৈরি করে। তিনি তিন তিনবার রিপোর্টে বলেছেন বাচ্চা সুস্থ আছে। এতো বড় একটি হাসপাতালে যদি এমন ভুল রিপোর্ট তৈরি করে সেখানে আমরা সাধারণ মানুষ আর কোথায় ভরসা পাবো? আর এই ভুল রিপোর্টের কারণে আমার সদ্য জন্ম নেওয়া প্রথম সন্তানটি হারাতে হয়েছে। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে আমার স্ত্রীর প্রসব বেদনা উঠে। এসময় তৎক্ষণিক শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা শেষে বাচ্চার বিভিন্ন শারীরিক ত্রুটি ধরা পরে। শুক্রবার বিকেলে তারা খুলনার একটি হাসপাতালে রেফার করে। খুলনা নিয়ে যাওয়ার পর শনিবার রাতে সেখানে তোবা অসুস্থ বাচ্চা প্রসব করেন। পরবর্তীতে রোববার দুপুরে বাচ্চাটি মারা যায়। এই ঘটনায় ত্রী তোবা হাসপাতালে মৃত্যর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। তিনি আরোও বলেন, ওই হাসপাতালের চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন আগের থেকে বিষয়টি জানা থাকলে হইতো শিশুটিকে বাঁচানো সম্ভব হতো।
এদিকে সঠিক সময়ে নবজাতকের চিকিৎসা না করে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেন নবজাতকটির বড় চাচা নাজিমুদ্দিনসহ এলাকাবাসী। তারা বলেন, ভুল রিপোর্ট প্রদানকারী ওই চিকিৎসকের বহিস্কার ও চিকিৎসা লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। সেই সাথে তিনি অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা প্রদান করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
হাসপাতালের অভিযুক্ত সনোলজিস্ট ডা. ওয়ারা বেগম জানান, ৩০ সপ্তাহে ভ্রণের তেমন কিছু বোঝা যায় না। আমরা যা করেছি চিকিৎসা শাস্ত্র মেনেই প্রতিটি পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদান করা হয়েছে। তবে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়ে খোলাসা করে কিছু বলেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির ডেপুটি ডাইরেক্টর ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি। এখন ওই চিকিৎসকের অবহেলার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরোও বলেন, চিকিৎসকের লাইসেন্স বাতিল আমরা করতে পারি না এটি সরকারের হাতে। আমরা সর্বোচ্চ সুপারিশ করতে পারি।
এদিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তদন্ত শফিকুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
