চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
‘আমের মুকুল দেখে তিনটা বাগান কিনেছিলাম। প্রচুর পরিমাণ গুটিও এসেছে এই বছর। কিন্তু প্রচণ্ড তাপদাহ ও বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। সেচ দিয়ে আমের গুটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু এত গরমে তাও হচ্ছে না। কথাগুলো বলছিলেন আম ব্যবসায়ী শমসের আলী।
জানা যায়, বেশ কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে ও তাপদাহে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেখা নেই বৃষ্টির। ফলে গরম বেড়ে যাওয়ায় ঝরে পড়ছে আমের গুটি।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সোমবার একই সময়ে ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়াও গত ২ এপ্রিল থেকে টানা ১০ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে এ জেলায়।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলায় এ বছর ২ হাজার ১৯১ হেক্টর জমিতে আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল কিন্তু আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৭৪ হেক্টর বেশি। এতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৪ হাজার ৫১০ টন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১৬০ কোটি টাকা।
সদর উপজেলার আমচাষি ইকরামুল হক বলেন, দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে। গরমের কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। আমগাছে সেচ দেওয়া হচ্ছে, তারপরও গুটি টিকানো যাচ্ছে না।
আমচাষি ও ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, এ বছর আমের মুকুল ও গুটি এসেছে প্রচুর পরিমাণ। গত বছর শিলা বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। আশা ছিল, এই বছর সেই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। কিন্তু তীব্র তাপদাহ ও বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। এ নিয়ে চিন্তিত আমরা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গায় প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। প্রতিদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। এ জেলায় টানা ১০ দিন ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। তাপপ্রবাহ আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, এ বছর আম গাছে প্রচুর পরিমাণ মুকুল ছিল। সেই তুলনায় গুটিও এসেছে অনেক। কিন্তু তীব্র তাপদাহ ও প্রচণ্ড রোদের উত্তাপে ঝরে পড়ছে আমের গুটি।
তিনি আরো বলেন, আমরা চাষি ও ব্যবসায়ীদের আম গাছে পানি সেচ দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
আরও পড়ুন: নামাজ থেকে এসে ইজিবাইক না পেয়ে কাঁদছেন রেজাউল

 
									 
					