জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি
বৈশাখে চুয়াডাঙ্গা তীব্র তাপ প্রবাহে পুড়ছে। গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ২২ শতাংশ।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালের চেয়ে আজ তাপমাত্রা বেশি। এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানান, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বৈশাখের শুরুতে গরমে মানুষ হাঁপিয়ে উঠছ। তাপমাত্রা গত তিনদিন ধরে বাড়তে শুরু করেছে। সূর্যের প্রখরতায় মানুষ কাহিল হয়ে পড়ছে।
বুধবার দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। বাতাসে আদ্রতা ছিল ২২ শতাংশ। দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আদ্রতা ছিল ৩১ শতাংশ।
তাপমাত্রা প্রতিদিনই বাড়বে। তাপমাত্রা ও আদ্রতা বাড়তে থাকলে জনজীবনে গরম বেশি অনুভূত হবে। বৃষ্টির কোনো সম্ভবনা নেই। হঠাৎ করে জেলায় গরম বেড়ে যাওয়ায় সড়কে মানুষের চলাচল অনেক কম। রাস্তা দিয়ে গরমের উঠছে। গরমে মানুষের শরীর পুড়ে যাচ্ছে। মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। অনেকে গাছতলায় শুয়ে বসে থাকছে। গরমে সব বয়সের মানুষ কাহিল হয়ে পড়ছে। সূর্যের প্রখরতার কারণে শরীর জ্বলে যাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গা উপজেলার জামজামি গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম বলেন, ‘ভোরে মাঠে গিয়ে ধানের জমিতে কাজ শুরু করেতই সূর্য উঠছে। সূর্যের তাপের কারণে গরমে শরীর ঘেমে যাচ্ছে। বেশি সময় মাঠে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছেনা। অতিরিক্ত তাপের কারণে ধান গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলন বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। জমিতে পানি জমিয়ে রাখলেও শুকিয়ে যাচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা বাজারপাড়ার ভ্যানচালক রাজু বলেন, ‘সকালে বাড়ি থেকে ভ্যান নিয়ে বেরিয়েছি। গরমের কারণে সড়কে মানুষের উপস্থিতি কম। মানুষ না থাকলে ভাড়া হচ্ছে না। গাছের নিচে অলস সময় পার করছি। গরমে শরীরের পোশাক ঘেমে ভিজে যাচ্ছে।’
চুয়াডাঙ্গা জজ কোর্টের আইনজীবী আহসান আলী বলেন, ‘ঘরে বাইরে কোথাও শান্তি নেই। সূর্যের তাপ নয় এ যেন আগুনের লেলিহান। শরীরে পোশাক রাখা কঠিন। বৈশাখ মাসের প্রথম দিকেই এত গরম, এখনও বাকি মাস পড়ে আছে। রাস্তা থেকে উষ্ণতা উঠছে। মুখ, পাসহ শরীরের অংশগুলো জ্বলে যাচ্ছে। ৪০ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা।’
চুয়াডাঙ্গা জীবননগর শাপলাকলি পাড়ার গৃহবধূ লিজা খাতুন বলেন, ‘গরমে ছেলে মেয়েরা হাঁপিয়ে উঠছে। বাইরে বের হতে পারছে না। পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। এখনই এত গরম বাকি সময় তো পড়েই আছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত গরম থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না।’