নিজস্ব প্রতিবেদক ও চৌগাছা প্রতিনিধি
যশোরের চৌগাছায় এক কলেজছাত্রীকে (১৭) গণধর্ষণের পর বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে চৌগাছা-মহেশপুর কাটগড়া বাওড়ের পাশে এই ঘটনা ঘটে। এই অভিযোগে সুশান্ত দাস (১৯) নামে এক যুবকে গ্রেপ্তারের পর ঝিনাইদহের মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে চৌগাছা থানা পুলিশ। আটককৃত সুশান্ত দাস চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের সুখদেব দাসের ছেলে। আর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মহেশপুরের কাটগড়া ডা. সাইফুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী (মুসলিম) ও অভিযুক্ত সুশান্ত একই কলেজে পড়াশোনা করেন। মঙ্গলবার দুপুরে তারা দুজন কলেজ শেষ করে চৌগাছা-মহেশপুর কাটগড়া বাওড়ের দিকে যায়। ওই জায়গায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে সুশান্ত ছাড়া আরো তিন যুবক তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী অজ্ঞান অবস্থায় শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে চৌগাছার একটি পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিলে চিকিৎসক তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। সেখান প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিক্ষার্থীকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করে। সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের পুড়াপাড়া ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। উদ্ধার করার সময় মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তিনি বলেন স্থানীয় কিছু যুবক সুশান্তকে আটক করে রেখেছিল। পরবর্তীতে ছেলেকে চৌগাছা থানার পুলিশের কাছে সোর্পদ করি। ওই এলাকাটা চৌগাছা সীমানার মধ্যে নয়। তবুও আমাদের ইউনিয়নের ছেলে মেয়ে হওয়ায় চেয়ারম্যানের নির্দেশে সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করি। চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আল ইমরান বলেন, মেয়েটির কাছে শুনতে চাইলে সে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের কথা মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়েছে। সে মানসিকভাবে আক্রান্ত। মেয়েটির বুকে, তলপেটেসহ বিভিন্ন জায়গায় দুর্বৃত্তরা লাথি, কিল-ঘুসি মেরে আহত করেছে।
ভুক্তভোগী মেয়েটির চাচা যশোর জেনারেল হাসপাতালে বলেন, সুশান্তের সঙ্গে আমাদের মেয়ের কোন প্রেমের সম্পর্ক আছে কিনা জানি না। তবে সে অসুস্থ বলে এখনো কিছু বলেনি। তবে অনেকেই তাকে ধর্ষণ করেছে বলে সে মাথা নেড়ে সম্মতি জানিয়েছে। একই সাথে বেধড়ক মারপিট করা হয়েছে। চৌগাছা থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ঘটনাস্থল পাশ্ববর্ত্তী মহেশপুর থানার অধীনে হওয়ায় ধর্ষক সুশান্ত দাসকে গ্রেপ্তার করে মহেশপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন এ ঘটনায় মহেশপুর থানা পুলিশ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার পার্থ প্রতীম চক্রবর্ত্তী বলেন, মেয়েটির ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সঠিক তথ্য দিতে পারবো। তবে মেয়েটি এখন গুরুতর অসুস্থ।