নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোরে সংঘটিত ছয়টি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে গত ২৫ জুন মো. ফসিয়ার রহমান মোল্লাকে (৬৫) মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। এরপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। বিভিন্ন স্থানে ঘুরছিলেন ছদ্মবেশে। এরপরও শেষ রক্ষা হলো না তার। গতকাল বুধবার নাটোরের লালপুর উপজেলার কদিমচিলান ইউনিয়নের পানঘাটা সরদারপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেফতারের বিষয়টি দৈনিক কল্যাণকে নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন। ফসিয়ার রহমানের বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার ছোট খুদরা গ্রামে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি যশোরের রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া তিনি একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
নাটোর ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘অভিযানে র্যাব-৫ এর সঙ্গে র্যাব-৬ এর সদস্যরা অংশ নেন। গ্রেপ্তারের পর ফসিয়ারকে র্যাব-৬ এর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’ র্যাব কমান্ডার ফরহাদ জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোরে ৬ জনকে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, আটকসহ বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত ছিলেন ফসিয়ার। আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ তারসহ ৪ জনের অপরাধ প্রমাণিত হয়। গত ২৫ জুন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুল ইসলামের নেতৃত্বে ফসিয়ারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডের আদেশের পর থেকে ফসিয়ার বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপন ছিলেন। পরবর্তীতে র্যাবের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে লালপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র্যাব কমান্ডার ফরহাদ।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ জুন মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোরের বাঘারপাড়ার চার রাজাকারকে মৃত্যুদ- দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন। অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। চার আসামি হলেন মো. আমজাদ হোসেন মোল্লা, ওহাব মোল্লা, মাহতাব বিশ্বাস, ফসিয়ার রহমান মোল্লা। চার আসামির মধ্যে আমজাদ হোসেন ছাড়া অপর তিন আসামি পলাতক। রায়ের দিন আমজাদকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায়ের পর তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আর তিন পলাতক আসামির মধ্যে বুধবার র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ফসিয়ার রহমান মোল্লা।
