ঢাকা অফিস
রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের জন্মদিন উদযাপনে ধার্য করা চাঁদা না দেয়ায় জোর করে রুম পরিবর্তন এবং যেতে না চাইলে মারধর ও রুম ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। যদিও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীর দাবি, চাঁদা তোলার বিষয়টি কলেজের ছোট বোনেরা করেছেন, তিনি জানতেন না।
গত শনিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কয়েক দফায় কলেজের নতুন হোস্টেলের ২০০৭ নম্বর কক্ষে এই ভাঙচুর-মারধরের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী লাইজু আফরিন। লাইজুর অভিযোগ, কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুনের নির্দেশেই তার অনুসারীরা এই হামলা করেন।
লাইজু বলেন, ‘গত একমাস ধরে সাইমুনের সঙ্গে আমার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভেদ হচ্ছে। তার অনেক অপরাধমূলক কাজের বিরোধিতা করায় তিনি আমার উপর মোটামুটি ক্ষুব্ধ। গত ১ মার্চ তার জন্মদিন ছিল। এ উপলক্ষে হোস্টেলের প্রায় সবার কাছ থেকেই তার অনুসারীরা ২০ টাকা করে চাঁদা তুলেছেন। তবে আমি এবং আমার রুমের কেউই কোনো চাঁদা দেইনি। আর জন্মদিনেও যাইনি।
‘এরপর কলেজের এক শিক্ষার্থী আমাদের একটা ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দেন। সেই পোস্টে ওই শিক্ষার্থী লিখেছেন, সাইমুন আপুর জন্মদিনে ২০ টাকা চাঁদা দিয়েছিলাম। কেক পাইনি। তাই বেলুন নিয়ে এসে টাকা উসুল করলাম।
লাইজু বলেন, ‘এই পোস্ট দেখে তার আরও মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আমিই সেই শিক্ষার্থীকে এই পোস্ট দিতে বলেছি ভেবে সাইমুন আপু আমার রুমে তার অনুসারীদের পাঠান। এরপর তার অনুসারীরা এসে আমার রুমমেটদের জোর করে রুম থেকে বের করে অন্য রুমে শিফট করাতে চায়। কিন্তু আমার রুমের কোনো সদস্যই যেতে না চাইলে তারা জোর করে বের করে দেয়। এরপর রুমের সব বিছানাপত্র ফেলে দেয়। বিভিন্ন আসবাবপত্রে ভাঙচুর চালায়। আমাকেসহ আরও কয়েকজনকে কিল-ঘুষি দিয়ে মারধর করে।
লাইজু বলেন, ‘আজকে সকালে আমাদের হোস্টেল সুপার ম্যাম আমাদের নিয়ে বসেছেন। তিন আমাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। আমরা এখন লিখিত অভিযোগ দিতে যাচ্ছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আক্তার সাইমুনকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে হাবিবা আক্তার সাইমুন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি কিছু জানি না। যা হয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের মধ্যে হয়েছে। সকালে আমাকে প্রশাসন থেকে ওদের কক্ষ পরিবর্তন করে দিতে বলা হয়। এখানে শুধু শুধু আমাকে জড়িত করা হচ্ছে। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
জন্মদিন উদযাপনে চাঁদার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গত ১ মার্চ আমার জন্মদিন ছিল। সেখানে হলের ছোট বোনেরা নিজেরা টাকা তুলে আমাকে সারপ্রাইজ দিয়েছিল। ব্যাপারটা এর আগে আমার জানাই ছিল না। পরে আমি উল্টো তাদের বকা দিয়েছি, এরকম করার কী দরকার ছিল বলে। কিন্তু আমার জন্মদিনে আমি ২০ টাকা করে চাঁদা তুলে উৎসব করেছি, এ ধরনের কাজের তো প্রশ্নই আসে না।
হলের সহকারী সুপার ও কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোছা. খুজিস্তা আক্তার বানু বলেন, ‘ঘটনাটিকে যেরকম বড় করা হচ্ছে আসলে বিষয়টি ততবড় নয়। এই ঘটনা এখন শান্ত হয়েছে। তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। আমরা দুই পক্ষের সঙ্গেই বসেছি। তাদের কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় ফালুর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল
১ Comment
Pingback: উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ড