নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরে ১৩ বছর ছিনতাই মামলা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত খালাস পেলেন দুই আসামি। ২০১২ সালের ১২ জুন দুপুর বেলায় ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হকের সরকারি বাসা থেকে মোটরসাইকেল, মোবাইল ও টাকা ছিনতাই ঘটনায় মামলা করেছিলেন। গতকাল ১৮ সেপ্টেম্বর যশোরের বিশেষ দায়রা জজ ও বিশেষ জজ জেলা ও দায়রা জজ) এসএম নুরুল ইসলাম এই রায় দিয়েছেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, যশোর শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়ার করিম বক্সের ছেলে আইয়ুব হোসেন সুমন ওরফে পাঠা সুমন এবং নড়াইল সদর উপজেলার রামসিদ্ধি গ্রামের পূর্বপাড়ার মৃত রোকন মোল্যার ছেলে শামীম আহম্মেদ।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১২ জুন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন নাজমুল হক। উপজেলা কমপ্লেক্সের মধ্যে সরকারি ডরমেটরিতে অবস্থান করছিলেন তিনি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে অজ্ঞাতনামা এক যুবক ওই কর্মকর্তার ডরমেটরির বাসায় প্রবেশ করে। প্রথমেই তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কিনা জানতে চায়। এসময় যুবকটি জানায় তার ভাগ্নি ঝিকরগাছার এমএল পাইলট স্কুলে লেখাপড়া করে। একটা যুবক তার ভাগ্নিকে উত্ত্যক্ত করছে বলে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে তিনি আপনার কাছে পাঠিয়েছেন। এরপরই যুবকটি বলছে আমি এই ব্যাপারে ভালো করে বলতে পারবোনা। আমার সাথে দুইজন বাইরে আছে তাদের ডেকে নিয়ে আসে। এরপর তিনজন সেখানে এসে বলছে অফিসে কারো সাথে আপনার কোন বিরোধ আছে নাকি ? এরপরই তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। তার কাছে টাকা নাই জানালে চাকু বের করে। এসময় ভয়ে কাছে থাকা এক হাজার টাকা ও একটি স্মার্ট ফোন বের করে দেন। এরপরও তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে গাড়িসহ চলে যায়। এই ঘটনায় তাৎক্ষণিক ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়ে থানায় অজ্ঞাতনামা তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনিচুজ্জামান ও এসআই মফিজুর রহমান তদন্তকালে বিভিন্ন সময়ে যশোর শহরের ষষ্ঠীতলার পাঠা সুমন ও নড়াইলের শামীমকে গ্রেফতার করেন। এরপর পুলিশ অন্যান্যস্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাই হওয়া শিক্ষা কর্মকর্তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেন। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এসআই মফিজুর রহমান। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কোন তথ্য প্রমান না পাওয়ায় গতকাল দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক। কিন্তু মামলায় সাজা না হলেও দীর্ঘ ১৩ বছর মামলার ঘানি টেনে শেষ পর্যন্ত খালাস পেলেন তারা।