# সকালে দুর্ভোগে পড়েন শিক্ষার্থী ও আইনজীবীরা
# দুর্ভোগ এড়াতে ওভারব্রিজ নির্মাণ দাবি
# আইনজীবী টু আদালত ভবনে হতে পারে ‘স্কাইওয়াক’
আব্দুর রউফ
যশোর শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা জজ কোর্ট মোড়। চারটি রাস্তার মিলিত স্থান এই জজ কোর্ট মোড় ঘিরে সকাল থেকে রাত অন্তত ৮টা পর্যন্ত বিশেষ করে সরকারি কর্ম দিবস ৫দিন যানজট লেগেই থাকে। মোড়ের আইনজীবী সমিতির সামনে ও বিপরীত পাশে শহীদ পলাশ স্মৃতি স্তম্ভ লাগোয়ায় ইজিবাইক ও রিকশা অবস্থান করায় যানজট তীব্র হয়। ফলে আদালতে সেবা নিতে আসা নারী-পুরুষ ও বয়স্ক আইনজীবীরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। দুর্ভোগ এড়াতে এক সময় আইনজীবী ভবন টু আদালত ভবন ‘স্কাইওয়াক’ করার দাবি উঠেছিল। কিন্তু সেই দাবিটি বাস্তবায়ন নিয়ে আর কোন পক্ষই আর এগোয়নি।
জানা যায়, জজ কোর্ট মোড়ের চারদিকে সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ অফিস রয়েছে। এছাড়া এ মোড় দিয়ে যশোর সদর হাসপাতালসহ দড়াটানায় যাতায়াত করতে হয় হাজার হাজার মানুষের। এজন্য যানজট সেখানে নিত্যসঙ্গী। বিশেষ করে সকালে অফিস ও স্কুল টাইমে যানজটে থেমে যায় রিকশা ও ইজিবাইকের চাকা। কারণ এ মোড়ের পূর্ব প্রান্তে অক্ষর শিশু শিক্ষালয় ও যশোর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের অবস্থান। আর পশ্চিম প্রান্তে চিফ জুড়িসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জজকোর্ট ভবন। আরো আছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। পূর্ব প্রান্তে আছে প্রেসক্লাব যশোর ও সার্কিট হাউজ। সকালে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যায়, আইনি সুরক্ষা পেতে আদালতে ও আইনজীবীর কাছে যান বহু মানুষ। এজন্য সকালে যানজটের চিত্র দিনের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি বলে মনে করেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।
এদিকে, সিভিল কোর্ট মোড়ে খেয়াল খুশিমতো ইজিবাইক, রিকশা পার্কিং করে দাঁড়িয়ে থাকছে। প্যাসেঞ্জারের অপেক্ষায় দুই-তিন সারি লাইনও দিয়ে পার্কিং করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। মাঝেমাঝে পরিস্থিতি এতোটায় খারাপ হয় যে, হেঁটে রাস্তা পার হওয়ায় দায়। কখনো কখনো ছোট বড় দুর্ঘটনাও ঘটে এখানে।
জানতে চাইলে আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, জজ কোর্ট মোড়ে সবসময়ই যানজট লেগে থাকে। বিগত আট দশ মাস হল এই যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অবশ্য এর জন্য যশোর পৌর কর্তৃপক্ষ ট্রাফিক পুলিশ ও রোডের সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বে অবহেলা এবং সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গ্রামগঞ্জ থেকে আইনি সহায়তা নিতে আসা নারী, যাদের কোলে শিশু সন্তান থাকে এবং আমাদের কিছু বয়স্ক আইনজীবী আছেন তাদের এই রাস্তা পারাপার হওয়া অত্যন্ত কষ্টকর হয়। প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। এ সমস্যা সমাধানে তিনি সংশ্লিষ্টদের দুইটি পরামর্শ দিয়েছেন। ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা এবং ইজিবাইক দুইটা রঙে বিভক্ত করে একটি রং ধারণ করা থাকবে লাল আর একটি সবুজ। লাল রং সকাল ছয়টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলাচল করবে। দুপুর ২টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলবে সবুজ রং ধারণ করা রিকশা ও ইজিবাইক। তাহলে শহরে সৃষ্ট যানজট অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভাব। আরেকটি দাবি, যশোর হেড পোস্ট অফিস থেকে বাদশা ফয়সাল ইসলামী ইনস্টিটিউট স্কুলের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য ওভারব্রিজ এবং মুজিব সড়ক প্রেসক্লাব হয়ে সার্কিট হাউজের শেষ অংশে আরেকটি ওভারব্রিজ। এই দুইটি ওভারব্রিজ পথচারীদের মানুষের চলাচলের জন্য করা গেলে শহরের অনেক অংশে যানজট কমে যাবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
এবিষয়ে এ্যাডভোকেট রুহিন বালুজ বলেন, শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো এখন ফুটপাত ব্যবসায়ীদের দখলে। অবৈধ মুনাফার মাধ্যম হিসেবে কিছু লোককে বসিয়ে কিছু লোকা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করাচ্ছেন। যার কারণে পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
অপরদিকে, কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মিলন রহমান বলেন, স্কুল শুরু ও ছুটির সময় এমএম আলী রোড থেকে জজ কোর্ট মোড় পুরো ব্লক থাকে। তখন ট্রাফিক পুলিশ অনেকটা অসহায় হয়ে যায়। আসলে রাস্তায় চাপ বেড়েছে কিন্তু রাস্তা প্রশস্ত হয়নি। ফলে বিকল্প হিসেবে ওভার ব্রিজ নির্মাণ করার দাবি জানাই। এছাড়া ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত রাখতে পারলে পথচারীরা যানজটের সময় অন্তত হেঁটে হলেও যেতে পারবে।
