ডুমুরিয়া প্রতিনিধি
ডুমুরিয়ার স্কুল ছাত্র নিরব মন্ডল (১৩) হত্যাকাণ্ডে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তার সহপাঠীসহ পাঁচ কিশোর। গতকাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক রওনক জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি প্রদান করেছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে শুক্রবার রাত ৮ টায় গুটুদিয়া মঠ মন্দিরে নিরবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তার এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড হতবাক হয়েছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ। স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে প্রতিবেশিরাই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।
অন্যদিক, মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশ শনিবার হত্যায় জড়িত হিরকের বাবা প্রকাশ রায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহত নিরবের বাড়িতে যান সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি। তিনি এসময়ে দায়ীদের শাস্তি ও শোক সন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। অপরদিকে গুটুদিয়া এসিজিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে এবং শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক শংকর মন্ডল স্বাক্ষরিত এক শোক বার্তায় এ সমবেদনা জানানো হয়।
ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ কনি মিয়া বলেন, গ্রেফতারকৃত পাঁচ কিশোর আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে। আদালত সকলকে কারাগারে প্রেরণ করেছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে উপজেলার গুটুদিয়া অক্কুর চন্দ্র গোলদার বান্ধব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্র নিরব মন্ডলকে ওই বিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী সংঘবদ্ধ হয়ে হত্যা করে। ওই পাঁচজন হল নবম শ্রেণির ছাত্র মৃত সৈয়দ মোল্লার ছেলে সোহেল মোল্ল্যা (১৫), জিলেরডাঙ্গা গ্রামের পংকজ মন্ডলের ছেলে পিতু মন্ডল (১৪), গুটুদিয়া গ্রামের প্রকাশ রায়ের ছেলে ১০ শ্রেণির ছাত্র হিরক রায় (১৫), তেলিখালী গ্রামের অনিমেশ রায়ের ছেলে ১০ শ্রেণির ছাত্র পিয়াল রায় (১৫) ও গুটুদিয়া গ্রামের ক্ষিতিশ মন্ডলের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র দ্বীপ মন্ডল (১৩)।
ওই দিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে একটি মোবাইল ফোন দিয়ে পিতা শেখর মন্ডলের কাছে ছেলে ফেরত দেয়ার কথা বলে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা চায় ওই চক্রটি। পুলিশ মোবাইল ট্রাকিংসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে একজনকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। এরপর একে একে পাঁচজনই পুলিশের জালে ধরা পড়ে এবং তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্কুলের পরিত্যক্ত ঘর থেকে নিরবের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মামা হাজিডাঙ্গা গ্রামের বিশ্বজিত জোয়াদ্দার পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
আরও পড়ুন: ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে ডুমুরিয়ায় সহপাঠীকে অপহরণ করে হত্যা

 
									 
					