কথায় আছে ‘খাঁটি গুড় অন্ধকারেও মিষ্টি লাগে’। যশোরের চৌগাছার একজন ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বরের বিরুদ্ধে করা হয়েছে পরের জমি দখল ও সরকারি বাঁওড় দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ এবং মামলাও হয়েছে। ওই প্রচলিত কথার উদ্ধৃতি দিয়ে বলতে হয় তিনি নির্দোষ হলে তো খাঁটি গুড় অন্ধকারে মিষ্টি লাগার মতো তিনি ভালো বলে এমনিতেই প্রচার হয়ে যেত। আমাদের সমাজে নেতা-নেত্রীদের একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলে তারা সাথে সাথে বিবৃতি দিয়ে বলেন, অভিযোগ সব মিথ্যা। প্রতিপক্ষ আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর যদি সরকারি টাকা নিয়ে নয়ছয় বা আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাহলে বলবেন, যারা অভিযোগ করেছে তারা অনৈতিক সুযোগ দাবি করে না পেয়ে আমাকে ফাঁসানোর অপচেষ্টা করছে।
তিনি জনগণের সেবা করার প্রতিশ্রতি দিয়ে মেম্বর নির্বাচিত হয়ে প্রতিশ্রুতির কথা বেমালুম ভুলে গেছেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বরের ও তার লালিত সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে ওয়ার্ডের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
মেম্বরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা কি সত্য সে বিশ্লেষণ করার দায়িত্ব আমাদের নয়। কথা হলো এলাকার সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে এভাবে দাঁড়ালো কেন? তারা কি ভিলেজ পলিটিক্সে এতই পারদর্শী যে তিনি মেম্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন? এসব প্রশ্নের জবাবদিহি কারো কাছে করার দরকার নেই। তার বিবেকের কাছে জবাবদিহি করলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কারণ মানুষের বিবেক হচ্ছে সর্বোচ্চ আদালত। আমাদের সরল কথা হচ্ছে, একজন জনপ্রতিনিধির নির্বাচনের আগে জনগণের কাছে যেমন ছিলেন সেবার মাধ্যমে তিনি যদি সে অবস্থার চেয়ে নন্দিত হতে না পারেন, যদি হন নিন্দিত তাহলে তিনি ব্যর্থ। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির প্রতি নির্বাচনের পর যদি খেয়াল না থাকে তাহলে তো কেউ তাকে সমাদর করবে না। আয়নায় নিজের মুখ দেখলে সব সমস্যার সমাধান হয়। আমরা বলবো শুধু নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নয়, সব চেয়ারম্যানসহ জনপ্রতিনিধিদের এ কথাটির প্রতি সজাগ থাকতে হবে। তা না হলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সেই জমিদারী স্টাইলে চললে সবার পরিণতি এমনটাই হবে। কারণ জনগণকে দৃশত ক্ষমতাহীন ভাবলেও তারাই কিন্তু সব ক্ষমতার উৎস।