এম আর মাসুদ, ঝিকরগাছা
যশোরের ঝিকরগাছা মৎস্য কার্যালয়টি জনবল সংকটে কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারছে না। ছয়জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্থলে কার্যালয়টিতে একজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন। দীর্ঘদিন জনবল সংকট থাকায় কার্যালয়টির সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কার্যালয়টির নিজস্ব কোনো স্থাপনা না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও ভোগান্তি পোহাতে হয়।
এদিকে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ। এবারের শ্লোগান ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’। জনবল সংকটে এই উপজেলায় শ্লোগানটি বাস্তবায়ন কতটুকু সম্ভব হবে তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের হিসাব মতে, কার্যালয়টিতে একজন জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা, ক্ষেত্র সহকারী, কার্যালয় সহকারী ও কার্যালয় সহায়কের একটি করে পদ রয়েছে। এ ছয়টি পদের মধ্যে কার্যালয়টিতে কর্মরত আছেন জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও একজন কার্যালয় সহায়ক। পদগুলো দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকায় মৎস্য চাষিরা সেবা না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।
মৎস্য কার্যালয়ের হিসাব মতে, উপজেলাতে ৭ হাজার ৭৫৪ টি পুকুর, ১৮টি সরকারি জলাশয়, ১২টি খাল, ৯ টি বাঁওড়, ৭ টি বিল ও ২ টি নদী রয়েছে। ৪ হাজার ৯৮৯ জন মৎস্যচাষি এসব জলাশয়গুলোতে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করেন। তাছাড়া, ৬ হাজার ৫০০ মৎসজীবীও রয়েছেন এ উপজেলাতে।
এদিকে দীর্ঘদিন জনবল সংকট থাকায় কার্যালয়টির সেবা থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মৎস্যচাষি হাসানুজ্জামান ডালিম বলেন, আমার ৭০ বিঘা জলাশয়ে মৎস্য চাষ রয়েছে। কিন্তু উপজেলা কার্যালয়ে জনবল না থাকায় সমস্যায় পড়লে, সময়মতো প্রতিকার জানতে না পারায় এবছর অনেক টাকার মাছ মারা গেছে। এতে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কর্মকর্তারা না থাকায় মৎস্যচাষিরা ভোগান্তিতে আছেন।
জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম শাহজান সিরাজ বলেন, কার্যালয়টিতে জনবল না থাকায় কাক্সিক্ষত সেবা দেয়া যাচ্ছে না। তাছাড়া কার্যালয়ের কাজের পাশাপাশি মাঠ পর্যায় অনেক কাজ রয়েছে। সবমিলিয়ে কোন মতে দৈনন্দিন কাজ সম্পাদন করা কষ্ট হচ্ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহাম্মেদ বলেন, জনবল ও নিজস্ব কার্যালয়ের জন্য একাধিক বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই কিছু জনবল পাওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন তিনি।
