নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর সদরের রাজারহাটে ভৈরব নদের উপর ব্রিজ নির্মাণকাজ ঝুলে গেছে। ব্রিজ নির্মাণ করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) যশোর কার্যালয় দরপত্র আহ্বান করলেও জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তা বাতিল করা হয়েছে। তীরে এসে তরী ডোবার মতো অবস্থা হওয়ায় ব্রিজের জন্য এখন অপেক্ষা করতে হবে এলাকাবাসীর।
এলজিইডি যশোর মতে, রাজারহাট বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব নদের উপর ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যশোর অঞ্চল গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এখানে ৭২ মিটার দৈর্ঘ্যরে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু রাজারহাট বাজার প্রান্তে ‘ব্যক্তি মালিকানাধীন’ জমিতে দোকানপাট থাকায় জটিলতা বাধে।
জানতে চাইলে এলজিইডি যশোরের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী সানাউল হক বলেন, ব্রিজ নির্মাণে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু রাজারহাট বাজার প্রান্তে ব্যক্তি দোকানপাট রয়েছে। জটি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সম্প্রতি দরপত্র বাতিল করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, দোকানের মালিকদের সাথে কথা চলছে। আশা করছি জটিলতা থাকবে না। দ্রুত পুনঃদরপত্র আহ্বান করে ফের ব্রিজ নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
আরও পড়ুন: আবহাওয়ার বিরূপ আচরণে হাসপাতালে শিশু রোগী বৃদ্ধি
এলাকাবাসী জানায়, ১৯৮০ সালে সদর উপজেলার রাজারহাটে ভৈরব নদের ওপর ব্রিজটি নির্মিত হয়। এ ব্রিজটি দিয়ে কচুয়া, সীতারামপুর, বেলেডাঙ্গা, হামিদপুর ও রাজারহাট গ্রামের হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। গত পাঁচ বছর ধরে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গত বছর ভৈরব নদ খনন শুরু হলে ব্রিজটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ব্রিজটি ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
রাজারহাট বাজারের ইজারাদার হাসানুজ্জামান হাসু জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড যখন ভৈরব নদ খনন কাজ করে তখন ব্রিজের নিচের মাটি সরিয়ে নেয়। এর ফলে ব্রিজের পাইলিংয়ের তিনটি অংশ খসে পড়ে। এর ফলে ব্রিজটি ধসে যাচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজার হাজার মানুষ। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে ব্রিজটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণের দাবি করে আসছেন। দাবি আদায়ে তারা যশোর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় এলজিইডি। কিন্তু সেখানে দোকানপাট থাকায় জটিলতা রয়েছে।
জমির মালিক দাবি করা স্যানিটারি এন্ড হার্ডওয়ারের সত্ত্বাধিকারী সাদ্দাম হোসেন জানান, তার পাঁচটি ও তার চাচা গোলাম রসুলের ১৫টি দোকান রয়েছে। ব্রিজের যে দৈর্ঘ্য তাতে দোকান পর্যন্ত চলে আসছে। এতে তারা আপত্তি করেন। বিষয়টি সুরাহা না করে ব্রিজ নির্মাণ করতে তারা বাধা দেন। তবে ক্ষতিপূরণ পেলে তাদের কোন আপত্তি নেই।
রামনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান লাইফ বলেন, জমি নিয়ে জটিলতা রয়েছে। দোকান মালিকদের সাথে প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের আলোচনা চলছে। আশা করছি সমাধান হয়ে যাবে।
জানতে চাইলে যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাস বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজটি নির্মাণের জন্য জেলার মাসিক উন্নয়ন সভাতেও আলোচনা হয়েছে। জমি যদি মালিকানাধীন হয় তাহলে এলজিইডি জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দেবে। দোকান মালিকদের সাথে কথা বলে দ্রুত সমাধান করে সেখানে ব্রিজ নির্মাণের বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন:বেনাপোলে দুই দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ
১ Comment
Pingback: যশোর রাজীব হত্যার আরো দুইজন গ্রেপ্তার - দৈনিক কল্যাণ