নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের ১৭ নেতাকর্মী আদালত থেকে জামিন পেয়েও মুক্ত হতে পারলেন না। শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে তাদেরকে ফের কারাগারে নেওয়া হয়েছে। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে রোববার বিকেলে পুলিশের উপর হামলা ও নাশকতা মামলায় জেলা দায়রা জজ আদালতের মাধ্যমে তারা জামিন পান।
বিএনপির নেতারা হলেন, মণিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক প্রভাষক নাজমুল হক লিটন, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক মাস্টার হামিদুল ইসলাম, খানপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ডা. আব্দুস সালাম, রোহিতা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সিরাজুল ইসলাম ও খানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য হারুন অর রশিদসহ ১৭ জন নেতাকর্মী।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, মণিরামপুরের ১৭ নেতাকর্মী রোববার আদালতের মাধ্যমে জামিন পান। আদালতে জামিন পেলেও থানার নাশকতার মামলায় তাদেরকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়।
মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, নেতাকর্মীরা একটি মামলায় জামিনে থাকলেও পুরনো একটি নাশকতা মামলায় এসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদলত। তাই কারাফটকের মধ্যে তাদেরকে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য সমমনা দলের ডাকা টানা দু’দিনের হরতালের শেষ দিন সোমবার যশোরের জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক। এদিন সকালে যশোর থেকে বিভিন্ন রুটের যাত্রীবাহী বাস চলাচল করেছে। শহরের দোকানপাট ছিল খোলা। কোথাও দেখা পাওয়া যায়নি হরতাল সমর্থকদের।
এদিন সকাল ৯টার দিকে শহরের খাজুরা বাসস্ট্যান্ড পালবাড়ীমোড় ও খুলনা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, মানুষের জীবনযাত্রা ছিল স্বাভাবিক। তারা প্রয়োজনীয় কাজে যাত্রীবাহী বাসে উঠে গন্তব্যে যাচ্ছে। পরিবহণ শ্রমিকরা জানিয়েছে, যশোরের বিভিন্ন আঞ্চলিক রুটসহ দূরপাল্লার রুটে সকাল থেকেই বাস ছেড়ে গেছে। তবে যাত্রী কিছুটা কম ছিল। এছাড়া শহরের দোকানপাট খোলা ছিল। শহরের কোথাও হরতালের প্রভাব দেখা যায়নি। তবে চুড়িপট্টি ও কাপুড়িয়াপট্টি সড়কে বেশ কয়েকটি দোকানপাট বন্ধ ছিল। অবশ্য এদিন শহরে হরতালের পক্ষে পিকেটিং বা বিএনপি নেতাকর্মীদের কোন কর্মকাণ্ড দেখা যায়নি।
এদিকে, হরতালকে কেন্দ্র করে যশোরে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সাত নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলেছে দাবি করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন, যশোর সদরের বসুন্দিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান শফি, আরবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল করিম রাজু, নগরের ৫ নাম্বার ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি জাহিদ হাসান টগর, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৫ নাম্বার ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি ইকরামুল ইসলাম, কেশবপুর উপজেলার পাজিয়া ইউনিয়নের আরাফাত হোসেন, আখতারুল ইসলাম ও ডা. মিন্টু হোসেন।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলেও নেতা-কর্মীদের পুলিশি অভিযান থেমে নেই। বিএনপির চলমান এক দফার আন্দোলনে পুলিশের দমনপীড়নের অংশ হিসেবে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমনটা হতে পারে না।
