বিনোদন ডেস্ক
আসামের বাকসা জেলা কারাগারের সামনে বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। জনপ্রিয় গায়ক জুবিন গার্গের মৃত্যু মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচ অভিযুক্তকে স্থানান্তর করা হচ্ছিল তখনই এই ঘটনা ঘটে। এসময় শতাধিক লোক কারাগারের বাইরে জড়ো হয়ে পাথর নিক্ষেপ ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়, ফলে পুলিশকে লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করতে হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী ও সাংবাদিক আহত হয়েছেন। যদিও ঠিক কতটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়, স্থানীয় সংবাদকর্মীদের দাবি অন্তত তিনটি পুলিশ ভ্যান ও একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের গাড়ি আগুনে পুড়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কারাগারের বাইরে প্রায় একশ মানুষ অভিযুক্তদের স্থানান্তর দেখতে জড়ো হয়েছিলেন। কারা প্রশাসন জানায়, এখনও পর্যন্ত সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মুশালপুর শহর ও বাকসা জেলা কারাগার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে এবং পুরো জেলায় ইন্টারনেট ও মোবাইল ডেটা পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। আইজিপি অখিলেশ সিংহ বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে তদন্ত চলছে।
বুধবার সকালে গুয়াহাটি আদালতে পাঁচ অভিযুক্তকে হাজির করা হয়। আদালত তাদের ১৪ দিনের বিচারিক হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। দুপুর দুইটার দিকে তাদের প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের বাকসা জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হচ্ছিল, তখনই এই সহিংসতা ঘটে। এই মামলায় গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন ইভেন্ট সংগঠক শ্যামকানু মহন্ত, গায়কের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা, গায়কের আত্মীয় ও আসাম পুলিশের কর্মকর্তা সন্দীপন গার্গ, এবং দুই কনস্টেবল পরেশ বৈশ্য ও নন্দেশ্বর বরা। মামলার তদন্ত করছে আসাম পুলিশের সিআইডি ও ১০ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল।
বিশেষ ডিপিজি (সিআইডি) এম.পি. গুপ্তা জানিয়েছেন, সিঙ্গাপুর থেকে আসামি হিসেবে চিহ্নিত ১১ জন এনআরআইয়ের মধ্যে ১০ জন ইতিমধ্যেই গৌহাটিতে এসে সাক্ষ্য দিয়েছেন, বাকিদের জবানবন্দি গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। অন্যদিকে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, ভারত সরকার সিঙ্গাপুরে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠানোর অনুমতি চেয়েছে তদন্ত এগিয়ে নিতে। সিঙ্গাপুর সরকার “পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস” দিয়েছে বলে জানান তিনি। সিঙ্গাপুরের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার অ্যালিস চেং বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছি। অনুগ্রহ করে আমাদের পেশাগতভাবে তদন্তের জন্য সময় দিন।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে এক ইয়ট পার্টির সময় সাগরে সাঁতার কাটতে গিয়ে জুবিন গার্গের মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। তবে পরিবার ও ভক্তদের অভিযোগে হত্যা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র ও অবহেলার কারণে মৃত্যু ধারায় মামলা দায়ের করে আসাম সিআইডি।
