নিজস্ব প্রতিবেদক
যশোর জেলা জেলা প্রশাসক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে তৃতীয় ম্যাচে জয় পেয়েছে চৌগাছা উপজেলা। বৃহস্পবিার শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে তারা ২-০ গোলে হারিয়েছে কেশবপুর উপজেলাকে। চৌগাছার পক্ষে গোল করেছেন বিদেশি খেলোয়াড় মেজে ও শুভ। নিজের গোলের সাথে অপর গোলেও ছিল মেজের অবদান। তাতে ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় বেছে নিতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। মেজেই হয়েছে এ ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়।
যশোর জেলার দলের কোচ আনোয়ার পারভেজ ঢাকা থেকে ছুটে এসে নিজ উপজেলা চৌগাছার ডাগআউটে দাঁড়ান। তাতে উজ্জীবিত চৌগাছার খেলোয়াড়রা শুরুতে আক্রমাণত্মক খেলতে থাকে। ম্যাচের ছয় মিনিটে গোলের কাছাকাছিও চলে গিয়েছিল দলটি। দলের বিদেশি খেলোয়াড় মাঠের বামপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণ উঠেন। তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে বল ঠেলে দেন তার সতীর্থ ডি বক্সের মধ্যে থাকা তানভীরের কাছে। তিনি যে শট নেন তা চলে যায় গোল লাইনের বেশ কিছুটা বাইরে দিয়ে।
১০ মিনিটে আক্রমণে যায় কেশবপুর উপজেলা। ইস্রাফিল বিশ্বাসের নেওয়া কর্নার কিক চৌগাছার গোলরক্ষক নিশ্চিত গোল থেকে দলকে রক্ষা করেন ঠিকই কিন্তু ফিরতি বল পেয়ে যান তিনি নিজেই। গোলবার উদ্দেশ্যে করে তার নেওয়া ক্রসে মাথা ছোঁয়ান লিটন রায়। সেই বলটি অল্পের জন্য সাইডবারের পাশ দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে।
১২ মিনিটে প্রতিপক্ষের অর্ধের মাঝ মাঠ থেকে চৌগাছার মেজের মাটি কামড়ানো দূরপাল্লার শটটি চলে যায় গোল লাইনের অনেকটা বাইরে। ১৮ মিনিটে বামপ্রান্ত দিয়ে আবারো আক্রমণ করে তারা। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে জীম দূরপাল্লার এক ক্রস দেন। তা থেকে ডি বক্সে দাঁড়িয়ে থাকা মেজের হেড জালে জড়েিয় যায়। কেশবপুরের গোলরক্ষক শুভদীপ মন্ডলের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে গোল সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল কেশবপুর। মনিরুল ইসলামের দারুণ ক্রসটি সতীর্থ কোন খেলোয়াড় না থাকায় গোল আদায় করা হয়নি তাদের। প্রথমার্ধে ১-০ গোলে অগ্রগামী থেকে বিরতিতে যায় চৌগাছার খেলোয়াড়রা।
বিরতি থেকে ফিরে গোল সমতায় ফেরার জন্য আক্রমণের পর আক্রমণ গড়ে কেশবপুর। অন্যদিকে গোল ধরে রাখার জন্য কিছুটা রক্ষণাত্মক ভূমিকায় ছিল চৌগাছা। তবে কেশবপুরের আক্রমণগুলো চৌগাছার রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ফরেনার খেলোয়াড় আরিসেট, বাধন, কুন্ডু ও হাই অত্যান্ত দক্ষতার সাথে তা প্রতিহত করেন। এর পাশাপাশি তাদের গোলরক্ষক সিহাবও ছিলেন কার্যকরী ভূমিকায়।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটেই ফ্রি কিক পায় কেশবপুর। বিদেশি খেলোয়াড় ওসমানের নেওয়া শট সরাসরি চৌগাছার গোলরক্ষক সিহাবের হাতে চলে যায়। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে আবারো গোলের সহজ সুযোগ পায় কেশবপুর। গোলরক্ষককে একা পেয়ে গোল আদায় করে নিতে পারেনি তাদের ওসমান।
৪২ মিনিটে কেশবপুরের প্র্যাকটিসের ফ্রি কিক থেকে সাগরের হেড চৌগাছার গোলরক্ষক ডানদিকে ঝাপিয়ে পড়ে গোলের সুযোগ নষ্ট করে দেন। ৫২ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের সন্ধানে আক্রমণে যায় চৌগাছা। আরিসেটের ক্রস থেকে বড় ডি বক্সের মধ্যে বল পান জীম। তিনি যে শট নেন গোলবার লক্ষ্য করে তা ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। ৫৪ মিনিটে দ্বিতীয় গোলের দেখা পায় চৌগাছা। শুভ চৌগাছার দর্শকদের আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন। মেজের বাড়িয়ে দেয়া বল ধরে ডানপায়ে প্লেসিং শটে বল জড়িয়ে দেন কেশবপুরের জালে।
এরপরও কেশবপুরের খেলোয়াড়রা সমতার স্বপ্ন নিয়ে বেশ কয়েকটি আক্রমণ গড়ে। কিন্তু চৌগাছার রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষকের দক্ষতার কারণে তাদের আর গোল পাওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয়ের পাশাপাশি সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ে চৌগাছা উপজেলার খেলোয়াড়রা।
