নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রায় দুই সপ্তাহ পলাতক থাকার পর আলোচিত এসিড নিক্ষেপ মামলার প্রধান আসামি জসীমকে (৪০) নাটকীয় অভিযানে গ্রেফতার করেছে ঝিকরগাছা থানা পুলিশ। গত ১৭ জুলাই বিকেলে নড়াইল জেলার প্রত্যন্ত বিল এলাকায় জেলের ছদ্মবেশ ধারণ করে চালানো অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছয় বছর আগে ভুক্তভোগীর নাভারণ এলাকায় বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জেরে ডিভোর্সের পর চার বছরের সন্তানকে নিয়ে তিনি বাবার বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। একই এলাকায় ভাড়া থেকে দিনমজুরের কাজ করতেন জসীম। সুযোগ বুঝে তিনি ওই নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, যা ভিকটিম ও তার পরিবার ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে।
প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর থেকেই জসীম ওই নারীকে ফোনে বিরক্ত করতে থাকে। অবস্থা আরও খারাপ হয় গত ৩ জুলাই রাতে। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবারের পুরুষ সদস্যরা বাজারে গেলে সুযোগ নিয়ে জসীম বাড়ির জানালার পাশে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে ওই নারীকে লক্ষ্য করে এসিড নিক্ষেপ করে। এতে ওই নারী, তার মা ও ছোট ভাই দগ্ধ হন।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে ভিকটিমের বাবা ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ঘটনা পুলিশ প্রশাসনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। যশোরের পুলিশ সুপার আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই থানা পুলিশসহ একাধিক টিম মাঠে নামে।
অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ১৫ জুলাই পুলিশ জানতে পারে আসামি লোহাগড়া উপজেলার আমাদাহ এলাকায় অবস্থান করছে। অভিযান চালিয়ে সেদিন ধরা না পড়লেও অবশেষে ১৭ জুলাই বিকালে নড়াইলের কামাল প্রতাপ বিলের মাঝে তাকে ঘিরে ফেলে পুলিশ। পুলিশের এসআই তাপসের নেতৃত্বে একটি টিম জেলের ছদ্মবেশে বিলের মধ্যে প্রবেশ করে। পুলিশের উপস্থিতি বুঝতে পেরে জসীম পানিতে ঝাঁপ দিলে এসআই তাপসও ঝাঁপ দেন এবং ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসীম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এমন বর্বরোচিত ঘটনা প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা এবং নারী নিরাপত্তা নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
